Home বাংলা নিউজ পোশাক কারখানার ৬৩% ত্রুটির সংস্কারকাজ শেষ: অ্যাকর্ডের অগ্রগতি প্রতিবেদন

পোশাক কারখানার ৬৩% ত্রুটির সংস্কারকাজ শেষ: অ্যাকর্ডের অগ্রগতি প্রতিবেদন

পোশাক কারখানার ৬৩% ত্রুটির সংস্কারকাজ শেষ: অ্যাকর্ডের অগ্রগতি প্রতিবেদন

তৈরি পোশাকশিল্পের কর্মপরিবেশ উন্নয়নে গঠিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্রেতাদের জোট ‘অ্যাকর্ড অন ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেফটি ইন বাংলাদেশ’-এর সদস্য পোশাক কারখানা ভবনের কাঠামোগত, বৈদ্যুতিক ও অগ্নিবিষয়ক ত্রুটির ৬৩ শতাংশ সংস্কারকাজ শেষ হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত অ্যাকর্ডের সর্বশেষ অগ্রগতি প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। এতে আবারও কারখানাগুলোর বিরুদ্ধে সংস্কারকাজে ধীর গতির অভিযোগ উঠে এসেছে। এ বিষয়ে অ্যাকর্ড বলেছে, অধিকাংশ কারখানাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের ভবনের কাঠামোগত, বৈদ্যুতিক ও অগ্নিবিষয়ক ত্রুটি সংস্কারকাজ শেষ করতে পারছে না। কিছু কারখানা করতে পারলেও জটিল ত্রুটিগুলো সংস্কার করতে পারেনি। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর তৈরি পোশাকশিল্পের কর্মপরিবেশ উন্নয়নে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২১৭টি ব্র্যান্ড ও ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান, দুটি বৈশ্বিক শ্রম সংগঠন, আট বাংলাদেশি শ্রম সংগঠন ও চারটি বেসরকারি সংস্থার সমন্বয়ে অ্যাকর্ড গঠিত হয়। জোটটি গত জুলাই পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৬০০ পোশাক কারখানা প্রাথমিক পরিদর্শন শেষ করেছে।

প্রাথমিক পরিদর্শনের পর অ্যাকর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী পোশাক কারখানাগুলো সংশোধন কর্মপরিকল্পনা (ক্যাপ) দেয়। সেগুলো যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন করে অ্যাকর্ড। এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৪৬৩ কারখানার ক্যাপ অনুমোদিত হয়েছে। পরে কারখানাগুলো ক্যাপ অনুযায়ী ত্রুটি সংশোধনের কাজ করে। সেগুলো আবার যাচাই-বাছাই করতে ফলোআপ পরিদর্শন করেন জোটের প্রকৌশলীরা। অনেক ক্ষেত্রেই তখন নতুন ত্রুটি চিহ্নিত করে পুনরায় ক্যাপ দেওয়া হয়। গত জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন কারখানায় ৪ হাজার ৯৮টি ফলোআপ পরিদর্শন করেছে অ্যাকর্ড। অগ্রগতি প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রাথমিক ও ফলোআপ পরিদর্শন সম্পন্ন হওয়া পোশাক কারখানাগুলোর ভবনে ৫৪ হাজার ৪১৬টি বৈদ্যুতিক ত্রুটি চিহ্নিত হয়। এর মধ্যে ৩৩ হাজার ২৮২টি ত্রুটির সংস্কারকাজ শেষ। ৬ হাজার ৭৫০টি ত্রুটি সংস্কার শেষ হলেও অ্যাকর্ডের প্রকৌশলীরা এখনো তা যাচাই-বাছাই করেননি। বাকি ১৪ হাজার ৩৮৪টি ত্রুটির সংস্কারকাজ করছে কারখানাগুলো। এ ছাড়া চিহ্নিত ৩৯ হাজার ১৮২টি অগ্নিসংক্রান্ত ত্রুটির মধ্যে ১৬ হাজার ৭৪৪টির সংস্কারকাজ শেষ হয়েছে। ৫ হাজার ৭২৭টি ত্রুটি সংস্কার হলেও যাচাই-বাছাই হয়নি। আর ১৬ হাজার ৭১১টি ত্রুটি সংস্কারকাজ বর্তমানে চলমান আছে।

অন্যদিকে ভবনের কাঠামোগত ত্রুটি চিহ্নিত হয়েছে ২০ হাজার ৩৮৮টি। এর মধ্যে ৩ হাজার ৯০৮টি ত্রুটির সংস্কারকাজ শেষ। ৪ হাজার ২০৩টি ত্রুটি সংস্কার শেষ, তবে যাচাই-বাছাইয়ের কাজ হয়নি এখনো। বাকি ১২ হাজার ২৭৭টি ত্রুটি সংস্কার চলমান আছে। গত মে মাসে অ্যাকর্ডের তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে ঢাকায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছিল, জোটের সদস্য কারখানাগুলোর ৫৬ শতাংশ ত্রুটির সংশোধন কাজ শেষ করেছে। তখন পর্যন্ত কারখানার বৈদ্যুতিক, অগ্নি ও কাঠামোগত ৮৪ হাজার ১৭৪টি ত্রুটির মধ্যে ৪৭ হাজার ৭০৭ ত্রুটির সংস্কারকাজ শেষ হয়। কারখানার সংস্কারকাজের অগ্রগতি নিয়ে অ্যাকর্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অধিকাংশ কারখানা ভবন কাঠামোগত নকশা অনুযায়ী নির্মিত হয়নি। পরিদর্শন করা ১০ শতাংশের বেশি কারখানা ভবনের ছিল অতিরিক্ত লোড বা ভর, যা তাৎক্ষণিকভাবে সরানোর প্রয়োজন ছিল। এ ছাড়া নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য অধিকাংশ পোশাক কারখানায় প্রয়োজনীয় অগ্নি প্রতিরোধক দরজা, স্বয়ংক্রিয় অগ্নি সতর্কতার অ্যালার্ম, ভবন থেকে বের হাওয়া সিঁড়ি বা পথ অগ্নি প্রতিরোধক, বৈদ্যুতিক তারের সংযোগসহ বিভিন্ন বিষয়ে ত্রুটি ছিল। এদিকে সব ধরনের ত্রুটির সংস্কারকাজ শেষ করেছে অ্যাকর্ডের ১৯ সদস্য কারখানা। এই কারখানাগুলো স্বীকৃতিস্বরূপ সনদ পেয়েছে। সংস্কারকাজ সম্পন্ন করায় যেমন সনদ দেওয়া হচ্ছে, তেমনি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কর্মপরিবেশ উন্নয়নকাজে যথেষ্ট অগ্রগতি৷ অর্জনে ব্যর্থ কারখানাগুলোর সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করছে অ্যাকর্ড। এখন পর্যন্ত ৪৯ কারখানার বিরুদ্ধে এ ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে জোটটি।