Home Bangla Recent পোশাক শ্রমিকদের নতুন মজুরি বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্ত

পোশাক শ্রমিকদের নতুন মজুরি বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্ত

তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের জন্য নিন্মতম মজুরি বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শ্রমিকদের দাবি এবং মালিকপক্ষের সম্মতির প্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। মঙ্গলবার সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মজিবুল হক চুন্নুর সঙ্গে মালিকপক্ষ এবং বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের উপস্থিতিতে দীর্ঘ আলোচনার পর মজুরি বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ সময় শ্রম সচিব মিকাইল শিপারও উপস্থিত ছিলেন।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পোশাক শ্রমিকদের জন্য গঠিত নতুন মজুরি বোর্ডে সদস্য সংখ্যা হবে ৬ জন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান ছাড়া বাকিরা সদস্য হিসেবে মজুরি বোর্ডে কাজ করবেন। তারা যার যার খাত থেকে স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় বিবেচনা করে বাস্তবতার নিরিখে ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের খসড়া তৈরি করবেন। বোর্ড গঠন চূড়ান্ত হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে নিন্মতম মজুরি বোর্ড প্রণীত পোশাক শ্রমিকদের বেতন-ভাতা সংক্রান্ত ন্যূনতম মজুরির খসড়া প্রকাশ করবেন। এর আগে মজুরি বোর্ডের সঙ্গে মালিকপক্ষ ও শ্রমিকপক্ষ দফায় দফায় বৈঠক করবেন এবং নিজেদের মতো করে প্রস্তাব দেবেন। পরে মজুরি বোর্ড সবার প্রস্তাব পর্যালোচনা করে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি খসড়া চূড়ান্ত করবেন।

জানা গেছে, নিন্মতম মজুরি বোর্ডের সদস্য হিসেবে সরকারপক্ষ থেকে একজন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা মজুরি বোর্ডের সদস্য হিসেবে প্রেষণে নিয়োগ দিতে পারেন। মালিকপক্ষ ইতিমধ্যে তিনজনের নাম প্রস্তাব করেছে। তাদের থেকে যে কোনো একজন বোর্ডের সদস্য নিযুক্ত হবেন। এছাড়া ইন্ডাস্ট্রি অল তাদের প্রতিনিধি মনোনীত করবেন। এখন শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে গেলে বোর্ড গঠন চূড়ান্ত হবে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, চলতি মাসের মধ্যেই মজুরি বোর্ড গঠন হয়ে যাবে, যা শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে জানানো হবে। ইতিমধ্যে নিন্মতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান তার পদে বহাল আছেন। সরকারপক্ষ তাদের প্রতিনিধি ঠিক করে রেখেছেন। মালিকপক্ষ ৩ জনের নাম দিয়েছেন। এদের যে কোনো একজন হবেন মজুরি বোর্ডের সদস্য। বাকি পক্ষগুলোর প্রতিনিধি নির্বাচন হয়ে গেলেই শ্রম মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করবে।

দেশের পোশাক শিল্পে বর্তমানে ন্যূনতম মজুরি ৫ হাজার ৩০০ টাকা। এর মধ্যে মূল মজুরি ৩ হাজার টাকা। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে এই মজুরি কাঠামো বাস্তবায়িত হয়। তার আগে ন্যূনতম মজুরি ছিল ৩ হাজার টাকা। শ্রম আইন অনুযায়ী, মজুরি ঘোষণার এক বছর পর ও তিন বছরের মধ্যে মজুরি পুনঃনির্ধারণের সুযোগ আছে। পাঁচ বছর পরপর মজুরি বোর্ড গঠিত হবে। তবে সরকার প্রয়োজন মনে করলে যে কোনো সময় মজুরি বোর্ড গঠন করতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রমিক নেতা সিরাজুল ইসলাম রনি যুগান্তরকে বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি শ্রমিক কাজ করেন তৈরি পোশাক খাতে। নিয়ম অনুযায়ী, পোশাক খাতের সর্বশেষ মজুরি কাঠামো ঘোষণা হয়েছে ২০১৩ সালে। ওই সময়ে শ্রমিকদের সর্বনিন্ম বেতন ৫ হাজার ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। সে বিবেচনায় ২০১৮ সালের শুরুতেই পোশাক খাতের শ্রমিকদের নতুন ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের জন্য বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ‘বৈশ্বিক পোশাক খাতে নিম্নতম মজুরি-২০১৫’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে পোশাক শ্রমিকদের নিন্মতম মজুরি এখন ৬৮ ডলার, ভারতে ৭৮, ইন্দোনেশিয়ায় ৯২, পাকিস্তানে ৯৯, কম্বোডিয়ায় ১২৮ এবং মালয়েশিয়ায় ২২৫ ডলার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here