Home বাংলা নিউজ বাড়ছে শিল্পের মেয়াদি ঋণের পরিমাণ

বাড়ছে শিল্পের মেয়াদি ঋণের পরিমাণ

বাড়ছে শিল্পের মেয়াদি ঋণের পরিমাণ

চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) এ খাতে প্রায় ৪৯ হাজার কোটি টাকার ঋণ বিতরণ হয়েছে। গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরের একই সময়ে বিতরণ ছিল ৪৪ হাজার ৮০৪ কোটি টাকা। এ হিসাবে আগের অর্থবছরের তুলনায় এবারে ঋণ বিতরণ বেশি হয়েছে তিন হাজার ৯৭৯ কোটি টাকা। ঋণ বিতরণ বেড়েছে ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম এ বিষয়ে সমকালকে বলেন, তৈরি পোশাকশিল্প খাতের সংস্কারে বেশ ব্যয় হচ্ছে উদ্যোক্তাদের। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে উদ্যোক্তাদের ওই ব্যয় মেটাতে হচ্ছে। পাশাপাশি শিল্পে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ নিয়ে দীর্ঘদিন যে স্থবিরতা ছিল তা কাটতে শুরু করেছে। এতে শিল্পোদ্যোক্তাদের মধ্যে আস্থা বেড়ে মেয়াদি বিনিয়োগের জন্য ব্যাংক ঋণ নিচ্ছেন। রফতানিমুখী কিছু শিল্প নতুন করে গড়ে উঠছে। সামগ্রিকভাবে বিনিয়োগে কিছুটা গতি আসায় মেয়াদি ঋণ বাড়ছে। অর্থনীতির জন্য যা ইতিবাচক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের নয় মাসে বিতরণ হওয়া ৪৮ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকার মধ্যে প্রথম প্রান্তিকে বিতরণ হয়েছে ১২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা, দ্বিতীয় প্রান্তিকে বিতরণের পরিমাণ ছিল ১৭ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা এবং সর্বশেষ জানুয়ারি-মার্চ সময়ে বিতরণ হয়েছে ১৮ হাজার ২৬৪ কোটি টাকা। আদায়ও পর্যায়ক্রমে বাড়ছে। নয় মাসে ৩৫ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। তিন প্রান্তিকে আদায় হয়েছে যথাক্রমে ১১ হাজার ৭২ কোটি, ১১ হাজার ৯৪৫ কোটি ও ১২ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে গত মার্চ শেষে শিল্পের মেয়াদি ঋণের বকেয়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৪২ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক নির্মল চন্দ্র ভক্ত সমকালকে বলেন, শিল্পের মেয়াদি ঋণ নিয়ে উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ করেন। যার মাধ্যমে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় এবং উৎপাদনশীলতা বাড়ে। এতে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি একটি অংশ রফতানি হয়।

সামগ্রিক অর্থনীতিতে যা ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। অবশ্য আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এবারে শিল্পের মেয়াদি ঋণের প্রবৃদ্ধি কম হয়েছে। তবে প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। এ ছাড়া সামগ্রিকভাবেও শিল্প খাতে ঋণ বিতরণ আগের তুলনায় বাড়ছে। শিল্পোদ্যোক্তারা দীর্ঘ মেয়াদে ঋণ নিয়ে নতুন বিনিয়োগ করেন। এ কারণে মেয়াদি ঋণ বাড়লে তাকে ইতিবাচক হিসেবে ধরা হয়।

মেয়াদি ঋণের পাশাপাশি এখন সামগ্রিকভাবেও ঋণ বিতরণ বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, বেসরকারি খাতে গত এপ্রিল পর্যন্ত ছয় লাখ ৪৪ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। আগের বছরের একই সময় শেষে ছিল পাঁচ লাখ ৫৭ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকা। এ হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ঋণ বেড়েছে ৮৬ হাজার ৯৫৮ কোটি টাকা যা ১৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতিতে আগামী জুন নাগাদ বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ।

সংশ্লিষ্টরা জানান, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সুদহার কমাসহ বিভিন্ন কারণে সাম্প্রতিক সময়ে বিনিয়োগে কিছুটা গতি ফিরেছে। এপ্রিল শেষে ব্যাংকগুলোর গড় সুদহার কমে ১০ দশমিক ৬৪ শতাংশে নেমে এসেছে। দুই বছর আগেও যা ১২ শতাংশের বেশি ছিল। নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করেন এমন উদ্যোক্তারা এখন ১০ শতাংশের কম সুদে ঋণ পাচ্ছেন। এসব কারণে নতুন করে বিনিয়োগে আসছেন অনেকে।