Home বাংলা নিউজ বৈদেশিক বাণিজ্যে দেশি জাহাজ কমছে

বৈদেশিক বাণিজ্যে দেশি জাহাজ কমছে

বৈদেশিক বাণিজ্যে দেশি জাহাজ কমছে

দেশি মালিকানার বিদেশগামী জাহাজের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে আমদানি-রফতানিতে বিপুল অঙ্কের টাকা নিয়ে যাচ্ছে বিদেশি জাহাজগুলো। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের বিদেশগামী জাহাজের সংখ্যা ছিল ৬৩টি। গত অর্থবছরে তা কমে হয়েছে ৪৭টি। চট্টগ্রাম নৌবাণিজ্য অধিদপ্তরের প্রিন্সিপাল অফিসার প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ‘দেশের পতাকাবাহী বিদেশগামী জাহাজের সংখ্যা কমছে। জাহাজগুলোর অবস্থানগত ব্যয়, কর্মচারীদের বেতন ও আনুষঙ্গিক ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে এ সংখ্যা কমে যাচ্ছে। ফলে জাহাজ মালিকরা এসব জাহাজ স্ক্র্যাপ করে ইয়ার্ড মালিকদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে।’

 

নৌবাণিজ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বন্ধ হয়ে যাওয়া জাহাজগুলোর মধ্যে রয়েছে আবুল খায়ের গ্রুপের ইসমা, আমেসি ও রামসি নামে তিনটি জাহাজ। এ ছাড়া বেনগার্ড, সিম্পনি শিপিং ম্যানেজমেন্ট, একে শিপিং ম্যানেজমেন্টের বিদেশগামী জাহাজগুলোও বন্ধ হয়ে গেছে। বেসরকারি এইচআরসি শিপিংয়ের মালিকানাধীন আটটি এবং সরকারি বিএসসির দুটি জাহাজও বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বিদেশি জাহাজগুলোর মাধ্যমে বাড়ছে আমদানি-রফতানি। ফলে এসব জাহাজের ভাড়া বাবদ গুনতে হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। বন্ধ হয়ে যাওয়া বেনগার্ড শিপিং করপোরেশনের কর্মকর্তা মো. শাহাদাৎ বলেন, আন্তর্জাতিক জাহাজগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছে না দেশি পতাকাবাহী জাহাজগুলো। জ্বালানি খরচ বেশি হওয়া এবং জাহাজগুলোর অবস্থা খারাপ হয়ে যাওয়ার কারণে ভাড়া নিতে চান না আমদানিকারক ও রফতানিকারকরা। ফলে লোকসান গুনতে গুনতে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দেশি জাহাজগুলো।’

 

বাংলাদেশের সমুদ্রগামী জাহাজশিল্পকে রক্ষার জন্য ১৯৮২ সালে প্রণয়ন করা হয় ফ্ল্যাগ ভেসেল প্রটেকশন অর্ডিন্যান্স। এ অর্ডিন্যান্সে বলা আছে, আমদানি ও রফতানি মালপত্র বহনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজগুলো অগ্রাধিকার পাবে। মূলত দেশের স্বার্থে বিদেশি জাহাজ কোম্পানির একচেটিয়া রাজত্ব ভেঙে দেশি জাহাজশিল্প গড়ে তোলার জন্য এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়। আইনে বলা আছে, বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ কোনো নির্দিষ্ট সময়ে কোনো একটি রুটের মাল পরিবহনের জন্য বন্দরে উপস্থিত না থাকলে শুধু সে পরিস্থিতিতে বিদেশি জাহাজ ডিজি শিপিংয়ের কাছ থেকে ওয়েভার বা অনাপত্তিপত্র নিয়ে মাল তুলতে পারবে। এ ধরনের আইন শুধু বাংলাদেশে নয়, উন্নত ও উন্নয়নশীল বহু দেশেই রয়েছে। জাতিসংঘের আঙ্কটাডের নিয়মে বলা হয়েছে, সমুদ্রগামী পণ্য পরিবহন ব্যবসার ৪০ শতাংশ পাবে রফতানিকারক দেশ। ৪০ শতাংশ পাবে আমদানিকারক দেশ। মুক্তবাজার প্রতিযোগিতায় যার সামর্থ্য বেশি সে অবশিষ্ট ২০ শতাংশ ব্যবসা পাবে।