Home Bangla Recent ভিয়েতনাম ও ভারতের কাছে হারছে বাংলাদেশ

ভিয়েতনাম ও ভারতের কাছে হারছে বাংলাদেশ

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি

বাংলাদেশ থেকে চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে (জানুয়ারি-অক্টোবর) ৪৩৫ কোটি মার্কিন ডলারের পোশাক যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে। এটি গত বছরের একই সময়ে রপ্তানি হওয়া ৪৫৮ কোটি ডলারের পোশাকের চেয়ে ৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ কম।

বাংলাদেশি পোশাক রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্রই সবচেয়ে বড় বাজার। তবে ট্রাম্পের দেশে প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনাম ও ভারতের কাছে হেরেই চলেছে বাংলাদেশ। দেশ দুটি যেখানে বাজার হিস্যা বাড়াচ্ছে, বাংলাদেশের সেখানে কমছে। যুক্তরাষ্ট্রে গত বছর মোট পোশাকের ৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ জোগান দিয়েছিল বাংলাদেশের রপ্তানিকারকেরা। চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে সেটি কমে ৬ দশমিক ৩৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গত বছরের বাজার হিস্যা ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ থাকলেও এবার সেটি বৃদ্ধি করে ১৪ দশমিক ২৬ শতাংশ করে নিয়েছে ভিয়েতনাম। আর ভারত ৪ দশমিক ৫১ শতাংশের বাজার হিস্যাকে ৪ দশমিক ৬২ শতাংশে উন্নীত করেছে।

ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল (অটেক্সা) প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানির হালনাগাদ পরিসংখ্যান থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। এতে দেখা যায়, বছরের প্রথম ১০ মাসে বিভিন্ন দেশ থেকে ৬ হাজার ৮৪১ কোটি ডলার বা ৫ লাখ ৬০ হাজার ৯৬২ কোটি টাকার পোশাক কিনেছে যুক্তরাষ্ট্র। এটি বাংলাদেশের চলতি অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের চেয়েও পৌনে দেড় লাখ কোটি টাকা বেশি।

অটেক্সার হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ১৫৮ কোটি বর্গমিটারের সমপরিমাণ কাপড়ের তৈরিকৃত ৪৩৫ কোটি ৫১ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক, দশমিক ৫৬ শতাংশ।

রানা প্লাজা ধসের পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভালো করতে পারছে না বাংলাদেশ। গত বছর ৫৩০ কোটি ৫৬ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছিল। ২০১৫ সালে রপ্তানি হয়েছিল ৫৪০ ডলারের পোশাক। সেই হিসাবে গত বছর রপ্তানি কমেছিল ১ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

জানতে চাইলে নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সাবেক সভাপতি ফজলুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের জন্য টি-শার্ট, ট্রাউজারের মতো গতানুগতিক পোশাকই বেশি তৈরি করি। অন্যদিকে ভিয়েতনাম অনেক বৈচিত্র্যময় পোশাক উৎপাদন করছে। সে জন্যই তাদের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ভালো। তাই এই বাজারে ফিরতে হলে জরুরি ভিত্তিতে আমাদের পণ্য তালিকায় বৈচিত্র্য আনতে হবে।’

ফজলুল হক আরও বলেন, ‘ভারত সরকার পোশাক রপ্তানি বাড়াতে বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। শিগগিরই বিষয়টি বিশ্লেষণ করে দেখা দরকার, এসব উদ্যোগ রপ্তানি বাড়াতে কতটুকু ভূমিকা রাখছে। বিশ্লেষণের পর প্রয়োজন হলে আমাদের সরকারকেও দ্রুত কিছু উদ্যোগ নিতে হবে। কারণ বাজার ক্রমাগত হারাতে থাকলে পরে চেষ্টা করেও ফেরত পাওয়া যাবে না।

যুক্তরাষ্ট্রে শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক দেশ চীন। চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে ২ হাজার ৩১৬ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে চীন। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে এই রপ্তানি ৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ কম। বাজারটিতে দ্বিতীয় শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ ভিয়েতনাম ৯৮৪ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। তাদের প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৭৯ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ যথাক্রমে বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া ও ভারত। যুক্তরাষ্ট্রে গত জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়া ৩৯৩ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক, ২ দশমিক ৮১ শতাংশ। আর আলোচ্য সময়ে ভারত ৩২১ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করে। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here