Home বাংলা নিউজ ১৭৮ পোশাক কারখানার সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্কচ্ছেদ: অ্যাকর্ড-অ্যালায়েন্স

১৭৮ পোশাক কারখানার সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্কচ্ছেদ: অ্যাকর্ড-অ্যালায়েন্স

দেশের পোশাক খাতে কারখানাগুলোর নিরাপত্তা মানদণ্ড উন্নয়নে কাজ করছে আন্তর্জাতিক দুই ক্রেতাজোট। এ নিয়ে পরিদর্শন চালাতে গিয়ে শনাক্ত হওয়া ত্রুটি সংস্কারে পিছিয়ে থাকা পোশাক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্কও ছেদ করছে জোট দুটি। সম্পর্ক ছেদ হওয়া এসব কারখানাকে টার্মিনেটেড সাপ্লায়ার হিসেবে চিহ্নিত করছে ইউরোপভিত্তিক ক্রেতাজোট অ্যাকর্ড অন ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেফটি ইন বাংলাদেশ। অন্যদিকে একই ধরনের কারখানাকে সাসপেন্ডেড ফ্যাক্টরি বলে অভিহিত করছে উত্তর আমেরিকাভিত্তিক অ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স সেফটি। গত আড়াই বছরে ১৭৮ কারখানার সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করেছে জোট দুটি।

জানা গেছে, শ্রমিকের স্বার্থে কারখানার নিরাপত্তা পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থতা, ত্রুটিযুক্ত কারখানা খালি করায় অনীহা, অনৈতিক কর্মকাণ্ড, সংস্কারের প্রমাণ দিতে ব্যর্থতা, মূল্যায়নে অসহযোগিতা, কারখানা নকশার ঘাটতিসহ নানা কারণে এ ১৭৮টি কারখানার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছে ক্রেতাজোট দুটি। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই  দায়ী করা হয়েছে কারখানার নিরাপত্তা পদক্ষেপ গ্রহণ ব্যর্থতাকে। ফলে এসব কারখানার সঙ্গে লেনদেনে না জড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট দুই শতাধিক ক্রেতার প্রতি সুপারিশ জানিয়েছে জোট দুটি। তবে ত্রুটি সংশোধনসাপেক্ষে জোট দুটির সঙ্গে আবারো সম্পর্ক স্থাপনের সুযোগ রয়েছে কারখানাগুলোর। সেক্ষেত্রে নিজ খরচে মূল্যায়ন কার্যক্রম এগিয়ে নিতে হবে কারখানা কর্তৃপক্ষকেই।

সূত্র অনুযায়ী, বর্তমানে অ্যালায়েন্সের আওতাভুক্ত মোট কারখানার সংখ্যা ৬৭১। এসব কারখানায় কর্মরত রয়েছেন প্রায় ১১ লাখ শ্রমিক। অন্যদিকে অ্যাকর্ডের আওতাভুক্ত মোট কারখানা রয়েছে ১ হাজার ৬৪৭টি। এগুলোয় কর্মরত রয়েছেন প্রায় সাড়ে ১৯ লাখেরও বেশি শ্রমিক।

অ্যালায়েন্সের সম্পর্কচ্ছেদের তালিকায় কারখানা রয়েছে ১০৮টি। এর মধ্যে সাতটিতে পুনরায় সংস্কারকাজ শুরু হলেও তা এখনো সাসপেন্ডেড হিসেবেই চিহ্নিত রয়েছে। অন্যদিকে অ্যাকর্ডের ‘টার্মিনেটেড’ তালিকাভুক্ত কারখানার সংখ্যা ৭০। এগুলোর মধ্যে বৃহত্-ক্ষুদ্র ও মাঝারি তিন ধরনের কারখানাই রয়েছে। রয়েছে ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের মালিকানাধীন কারখানাও।

গত তিন মাসে অ্যাকর্ডের সম্পর্কচ্ছেদ করা কারখানাগুলোর মধ্যে রয়েছে— আনাম গার্মেন্টস, আশুলিয়া অ্যাপারেলস, হেসং করপোরেশন, হেসং করপোরেশন ইউনিট-২, হেসং সোয়েটার, হেসং নিটওয়্যার, এমএস অ্যাটায়ার্স, রিভারসাইড অ্যাপারেলস, রক নিটওয়্যার্স, তোবা গার্মেন্টস, অথেনটিক নিটওয়্যার্স, ফেয়ার কটন (পিভিটি), গোল্ডমার্ট অ্যাপারেলস (পিভিটি), ইন্টারকেয়ার, মিঠুন নিটিং অ্যান্ড ডায়িং (সিইপিজেড) ও টাইম নিটওয়্যার (পিভিটি)।

এর বাইরে অ্যাকর্ডের টার্মিনেটেড তালিকায় রয়েছে— ড্যানিশ নিট ওয়্যার, হ্যান এ হ্যাটস অ্যান্ড ক্যাপস, হ্যানওয়েন বিডি, কেন্টো এশিয়া, ফ্রেশ ফ্যাশনওয়্যার, ফাবিন অ্যাপারেলস, ওয়ার্ল্ড ভিক্টরি গার্মেন্টস, অ্যাগস অ্যাপারেলস, এসএস সোয়েটার কো., সাফওয়ান ফ্যাশনস, উইনটেক্স ফ্যাশনওয়্যার, আমিচি অ্যাপারেলস, কেমস ফ্যাশনস, কাশফি নিট, কেএস ফ্যাশন, কেম অ্যান্ড কমল ফ্যাশন ওয়ার্স, মাভিন ডিজাইন, ফ্রেশ অ্যাপারেলস, ইয়ং ইন্টারন্যাশনাল, অল ওয়েদার ফ্যাশনস, ক্রিস্টাল অ্যাপারেলস, এম-ইউ ফ্যাশন, পদ্মা সোয়েটার্স, স্মার্ট জিন্স, স্মার্ট জ্যাকেটস (বিডি), শিহান স্পেশালাইজড টেক্সটাইল মিলস, আরবি ইন্ডাস্ট্রিজ, অ্যাসারশন ডিজাইন, বন্ডেড ফ্যাশন, ক্যামলেট ফ্যাশনস, ডিনায়ার ফ্যাশন, ফপটেক্স (পিভিটি), গ্লেয়ার ফ্যাশন, গ্রিন লাইফ নিটেক্স, মার্ক মোড, সিলভার স্টাইল অ্যান্ড ডিজাইন, সুং কুয়াং সোয়েটার্স, আলিম নিটওয়্যার্স, এনএ গার্মেন্টস, সিডকো, সুমন ফ্যাশন গার্মেন্টস, প্রমিনেন্ট অ্যাপারেলস, আলফা নিট অ্যাপারেলস, কেলভিন ফ্যাশন, কপার কো., জেসিস অ্যাপারেলস, আরএম কার্টন, আরএম এমব্রয়ডারি, সিনসিয়ার নিট গার্মেন্টস ইউনিট-১, সিনসিয়ার নিটওয়্যারস, সিনসিয়ার কম্পোজিট, সাদাফ ফ্যাশনস, মেসার্স মেগা চয়েজ নিটওয়্যার ও ফ্লোরেন্স ফ্যাশনস।

অন্যদিকে অ্যালায়েন্সের গত তিন মাসে সাসপেন্ডেড চিহ্নিত কারখানার তালিকায় যোগ হয়েছে লিংকওয়্যার লিমিটেড, হেসং সোয়েটার, এইচডিএফ টেক্সটাইলস, এভারগ্রিন প্রডাক্টস ফ্যাক্টরি (বিডি), ওপেক্স ডিজাইনার্স, ওপেক্স রেডি ওয়্যার্স, স্টাইলো ফ্যাশন গার্মেন্টস, বনলতা গার্মেন্টস, ডানা সোয়েটার্স ইন্ডাস্ট্রিজ, লিজেন্ড টেক্সটাইলস, সজিব ফ্যাশনওয়্যার, স্টফাটেক্স ফ্যাশনস, ট্রেন্ডেক্স ও উচো ফ্যাশন।

অ্যালায়েন্সের সাসপেন্ডেড চিহ্নিত অন্যান্য কারখানা হলো— এশিয়ান অ্যাপারেলস, কামফা আউটডোর, বায়েজিদ অ্যাপারেলস, ফরচুন ফ্যাশন, নিটেক্স অ্যাপারেলস, গ্লোবাল ট্রাউজার্স, দ্য ঢাকা ডায়িং গার্মেন্টস, উপন্তি অ্যাপারেলস, ভিঅ্যান্ডআর ফ্যাশনস, আম্বিয়া অ্যাপারেলস, আনজির অ্যাপারেলস, ফ্যাশন স্টোর, জেডএসবি গার্মেন্টস, হেম্পল রি ম্যানুফ্যাকচারিং কোং (বিডি), মিকা ফ্যাশন, শমসের অ্যাপারেলস, সাভান্নাহ অ্যাপারেলস, নিডল আর্ট এমব্রয়ডারি, তুসুকা প্রসেসিং, ক্রিয়েটিভ শার্টস (ইউনিট-২), টেক্স টেক কোং, এবিসি ইন্টারন্যাশনাল, আমিন ফ্যাব্রিকস, অ্যানজেল সোয়েটার, আর্টিস্টিক অ্যাপারেলস, সিএনএল পলিপ্যাক, কোডস অ্যান্ড লেবেল (পিকেজি), গোকালদাস ইমেজেস (বাংলাদেশ) পিভিটি, হ্যামস ফ্যাশন ইউনিট-১, এইচকেডি (হাই-টেক), লিরিক ইন্ডাস্ট্রিজ, এমঅ্যান্ডইউ প্যাকেজিং, মোস্তফা গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, রওশান অ্যাপারেলস, আনোয়ারা অ্যাপারেলস, বুমন্ড অ্যাপারেলস, সিডিএফ ডিজাইন, দিশাং সোয়েটার, হাই-টেক ফ্যাশনস, এমঅ্যান্ডএম শার্টস, মায়েস্ত্রো ফাইভ, নিম্মি অ্যাপারেলস, তিভোলি অ্যাপারেলস, ভ্যালিয়েন্ট ফ্যাশনওয়্যার, ভ্যানগার্ড ফ্যাশনস, ডেনিম প্রসেসিং প্লান্ট, আনজির অ্যাপারেলস, আসিফ অ্যাপারেলস, ফ্রেন্ডস এনমন্ড ফ্রেন্ডস অ্যাপারেলস, ইলেট ফ্যাশন, ইন্ডিগো ওয়াশিং, সামিয়া গার্মেন্টস, সো নাইস গার্মেন্টস, ভ্যালিয়েন্ট গার্মেন্টস, এএমসি সোয়েটার, দারদা নিটওয়্যারস, ম্যাগি অ্যান্ড লিজ করপোরেশন (পিভিটি), মাক্স ফ্যাশন, মনটেক্স অ্যাপারেলস, আশিয়ানা গার্মেন্টস, লাভক্রাফট গার্মেন্টস, ভিনটেজ প্রিন্ট অ্যান্ড অ্যারো লেবেল, বে ফ্যাশন, বেডহিড অ্যাপারেলস (বাংলাদেশ), বনি অ্যাপারেলস ইউনিট-২, ডিএস ফ্যাশন, এইচবি ফ্যাশনস, এইচকে-টিজি গার্মেন্টস, জান ফ্যাব্রিক, করিম ফ্যাশনওয়্যার, কিম্বারলি অ্যাপারেলস, ক্রিশাং নিটিং, মেসার্স প্যাসিফিক সোয়েটারস, মেসার্স উদয়, মাম গার্মেন্টস, ম্যাস ফ্যাশন, নাজিয়া অ্যাপারেলস, রিদম অ্যাপারেলস, রিদম গার্মেন্টস, আরএসআই অ্যাপারেলস (বাংলাদেশ), আরটি ক্লাসিকস, সুপার নিটিং অ্যান্ড ডায়িং মিলস, দ্যাটস ইট ফ্যাশনস, ইউনিট ফ্যাশনস ও ইউনিটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল (বিডি)।

এছাড়া অ্যালায়েন্সের সাসপেন্ডেড তালিকায় আরো সাতটি কারখানা রয়েছে। সম্পর্কচ্ছেদের পর কারখানাগুলো পুনরায় সংস্কার কার্যক্রম শুরু করায় তাদের নাম প্রকাশ করেনি ক্রেতাজোটটি।