Home বাংলা নিউজ মুনাফা পাঠাতে বাধার সম্মুখীন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা: ইইউ

মুনাফা পাঠাতে বাধার সম্মুখীন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা: ইইউ

মুনাফা পাঠাতে বাধার সম্মুখীন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা: ইইউ

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশের বিনিয়োগকারীরা নিজ দেশের মুনাফা পাঠাতে বাংলাদেশ থেকে বাধার মুখে পড়ছেন। লভ্যাংশ ও মূলধন নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও তারা সমস্যার মুখে পড়ছেন। এ অভিযোগ ইইউ রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদুনের। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইইউ-বাংলাদেশ ব্যবসায় পরিবেশ সংলাপে তিনি এ অভিযোগ তোলেন।

ইইউ লিখিতভাবে জানিয়েছে, ব্যাপক মাত্রার নিয়ন্ত্রণমূলক লাল ফিতার দৌরাত্ম্যের ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক বিস্তারিত নথিপত্রের একটি লম্বা তালিকা চায়। একই প্রসঙ্গে কোম্পানির কমপ্লায়েন্স পরীক্ষা করে থাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মুনাফার অর্থ ফেরত নিতে বছরের পর বছর লেগে যায়। ইইউর অধিকাংশ কোম্পানি মুনাফা নিতে বাধার মুখোমুখি হচ্ছে। অন্যদিকে পরামর্শক সেবা, কারিগরি সেবা, উচ্চ হারে কর নেওয়া হচ্ছে। এ কর ৩০ শতাংশ পর্যন্ত নেওয়া হয়।

ইইউর বক্তব্যের ব্যাখ্যা জানতে চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি পাঠিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দ্য ফরেন প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন অ্যান্ড প্রটেকশন অ্যাক্ট-১৯৮০ অনুযায়ী বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মুনাফা, লভ্যাংশ ও মূলধন নিয়ে যেতে পারে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাদের অর্থ নিতে চাইলে প্রাসঙ্গিক কিছু তথ্য-উপাত্ত চাওয়া হয়।

বিনিয়োগ বোর্ড বলছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন যে অভিযোগ করেছে, তা সত্য নয়। সংস্থাটির সদস্য নাভাষ চন্দ্র মণ্ডল সমকালকে বলেন, সম্প্রতি ইইউভুক্ত একটি কোম্পানিকে অর্থ নেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়নি, এটা সত্য। তবে তা কোনো জটিলতা নয়। ওই কোম্পানি যেভাবে অর্থ নিতে চেয়েছে, তার অনুমোদন দেওয়ার সুযোগ আইনে নেই। এ ছাড়া অন্য কোনো কোম্পানির প্রস্তাবই আটকে নেই।

সংলাপে ইইউ প্রতিনিধিরা বলেছেন, বিনিয়োগকারীরা যথাসময়ে ও সহজে মুনাফা নিয়ে যাওয়ার অনুমোদন না পাওয়ায় সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে। অপ্রয়োজনীয় প্রশাসনিক জটিলতা বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর ব্যবসার খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে। বিভিন্ন সেবার বিপরীতে আয়ের ওপর অতিরিক্ত করারোপ বিদেশ থেকে সেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করছে। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ-ইইউ বিজনেস কাউন্সিল গঠন হয়। কাউন্সিল গঠনের পর গত ১২ মে প্রথমবার ‘বাংলাদেশ ব্যবসায় পরিবেশ সংলাপ’ অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপের উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। সংলাপে ইইউর পক্ষে ৩৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। এই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পিয়েরে মায়াদুন। এ ছাড়া ইইউভুক্ত যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, ডেনমার্ক, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস, স্পেন_ এই আট দেশের রাষ্ট্রদূতরা উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশের পক্ষে সংলাপে নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন।

দেশের বার্ষিক রফতানি আয়ের ৫৫ শতাংশ ইইউভুক্ত ২৮ দেশ থেকে আসে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসেবে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ ইইউভুক্ত ২৮ দেশে এক হাজার ৭০০ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি করেছে। একই সময়ে দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ আমদানি করেছে ২৪৫ কোটি ডলারের পণ্য। বিনিয়োগ বোর্ডের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে ১৬৩ কোটি ১০ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ১৩৪ কোটি ২০ লাখ ডলার।