নানা সংকটে রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী রেশম শিল্পে চলছে রুগ্ন অবস্থা। কোনোভাবে টিকে থাকা রেশম কারখানাগুলোও চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। এরই মধ্যে সিল্ক শোরুমগুলোয় জায়গা করে নিয়েছে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন পোশাক। কারখানাগুলোয় এখন সিল্কের পাশাপাশি সুতি কাপড়ের কাজও হচ্ছে।
রাজশাহীর সিল্কপল্লীর কারিগরদের আগে অবসরের সুযোগ ছিল না। ঈদ সামনে রেখে রাত-দিন ব্যস্ত থাকতে হতো কারিগরদের। তারা নিপুণ হাতে বুনতেন সিল্কের শাড়ি, থ্রি-পিস, পাঞ্জাবিসহ নানা ধরনের পোশাক। কিন্তু এখন চিত্র অনেকটাই বদলে গেছে। রেশমের অঞ্চলেই নেই এখন রেশমি কাপড়ের কদর। এখন সিল্কের কারিগররাই তৈরি করছেন অন্য পোশাক।
বিষয়টি স্বীকার করে রাজশাহীর অন্যতম রেশম কারখানা সপুরা সিল্কের স্বত্বাধিকারী সদর আলী জানান, আগে তারা প্রচুর পরিমাণে সিল্কের পোশাক উত্পাদন করতেন। দেশ-বিদেশে সমান জনপ্রিয় ছিল তাদের পণ্য। এখন রেশম সুতার দামও বেড়েছে। ফলে উত্পাদন খরচও বেড়েছে। বেড়েছে পণ্যের দাম। ফলে কোথাও কোথাও গুটিয়ে নিতে হয়েছে ব্যবসা। তিনি বলেন, মানুষের রুচিরও বদল হয়েছে। ফলে শোরুমগুলোয় বাধ্য হয়ে অন্য পোশাক রাখতে হচ্ছে। শুধু তারাই নন, এ তল্লাটের সব সিল্ক ব্যবসায়ীরই একই দশা।
রাজশাহী বিসিক শিল্প এলাকার সপুরা সিল্কের শোরুম ঘুরে এ বক্তব্যের সত্যতা মিলল। বিশাল শোরুমের অল্প জায়গাজুড়ে রয়েছে সিল্কের শাড়ি, থ্রি-পিস ও পাঞ্জাবি। আর বাকি জায়গা দখল করেছে টাঙ্গাইলের জামদানিসহ বিভিন্ন দেশী শাড়ি। সুতি থ্রি-পিস আর পাঞ্জাবিতে পুরো শোরুম ভর্তি। এমনকি রয়েছে খেলনা ও শোপিসের বিশাল সম্ভার। জায়গা পেয়েছে বিদেশী বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পোশাক। রয়েছে নকশিকাঁথার বিশাল মজুদ। একই চিত্র চোখে পড়ল পাশের ঊষা সিল্ক, আমেনা সিল্কসহ অন্য সিল্ক শোরুমগুলোয়ও। ব্যবসা টেকাতেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে ঈদ সামনে রেখে বাহারি সব পোশাক কিনতে এরই মধ্যে ভিড় বেড়েছে রাজশাহীর এসব শোরুমে।