বাংলাদেশের উদীয়মান তৈরি পোশাক শিল্প অচিরেই বিশ্বের শীর্ষস্থান দখল করবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা (আঙ্কটাড) এর মহাসচিব ড. মুখিসা কিটুই। তিনি বলেন, তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতির দৃষ্টান্ত বিশ্বের যে কোনো দেশের জন্য অনুকরণীয়।
কেনিয়া সফররত শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর সঙ্গে বৈঠককালে আঙ্কটাডের মহাসচিব এ অভিমত ব্যক্ত করেন। নাইরোবীর কেনিয়া ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে মঙ্গলবার রাতে এ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলোর শিল্পায়ন ও বিনিয়োগ প্রবাহ বাড়াতে আঙ্কটাডের সহায়তা জোরদারের বিষয়ে আলোচনা হয়। এ সময় বাংলাদেশের উদীয়মান চামড়া, প্লাস্টিক, ওষুধ শিল্পের উন্নয়নের পাশাপাশি কেনিয়ায় বাংলাদেশী দক্ষ শ্রমিক আমদানির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বৈঠকে আঙ্কটাডের মহাসচিব বাংলাদেশের চামড়া, প্লাস্টিক, ওষুধ শিল্পের অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এ তিনটি শিল্পখাতে বাংলাদেশের অর্জন বিশ্বের অন্য দেশের জন্য রোল মডেল হতে পারে। বিশ্ব বাণিজ্যিক নেতৃবৃন্দের অবগতির জন্য এ তথ্য ওয়ার্ল্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরামের সমাপনী অধিবেশনে তুলে ধরবেন বলে তিনি শিল্পমন্ত্রীকে অবহিত করেন। পাশাপাশি এসব শিল্পসহ সামগ্রিক শিল্পখাতের অগ্রগতি সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য আঙ্কটাডের একটি প্রতিনিধি দল শিগগিরই বাংলাদেশ সফরে আসবে বলে জানান তিনি।
আঙ্কটাডের মহাসচিব বলেন, কেনিয়ায় এখনও প্রচুর পরিমাণে অব্যবহৃত জমি রয়েছে। এসব জমিতে তুলা চাষ করে সুতা উৎপাদনের সুযোগ রয়েছে। তুলা থেকে সুতা উৎপাদনের লক্ষ্যে তিনি বাংলাদেশ থেকে দক্ষ তুলা চাষি ও অভিজ্ঞ শ্রমিক আমদানির বিষয়ে শিল্পমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এর মাধ্যমে কেনিয়ায় তুলা ও সুতা উৎপাদনখাতে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা স্থানান্তরের সুযোগ তৈরি হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প ইতিমধ্যে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, উদ্যোক্তাদের দক্ষতা এবং মনোবলের কারণে বিশ্বমন্দার মাঝেও বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে। তিনি বাংলাদেশ থেকে দক্ষ তুলা চাষি ও শ্রমিক আমদানির বিষয়ে আঙ্কটাড মহাসচিবের প্রস্তাবকে স্বাগত জানান। এ বিষয়ে কেনিয়া সরকারের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পেলে বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বৈঠকে শিল্পমন্ত্রী আঙ্কটাড মহাসচিবকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। জবাবে আঙ্কটাড মহাসচিব খুব শিগগিরই দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশ সফরে আসবেন বলে শিল্পমন্ত্রীকে অবহিত করেন।