যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে গেলেও বাংলাদেশের সঙ্গে সে দেশে বাণিজ্যে কোনো প্রভাব পড়বে না। গত মঙ্গলবার কেনিয়ার নাইরোবিতে আঙ্কটাডের সম্মেলনে যোগ দেওয়া বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধিরা ওই আশ্বাস দেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ গতকাল বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রীকে যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি দলের নেতা মি. ম্যাথিউস জানান, বিগত দিনের মতো বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক, বিনিয়োগ ও বাণিজ্য স্বাভাবিক থাকবে। বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য সহযোগী। বাংলাদেশসহ এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য যুক্তরাজ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা অব্যাহত থাকবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে আসার বিষয়টি চূড়ান্ত অনুমোদনের পরবর্তী দুই বছর সব বিষয় আগের মতো অব্যাহত থাকবে। এরপরও যুক্তরাজ্য সরকারের নীতির কোনো পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের তৃতীয় বৃহত্তম বাজার। গত বছর বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যে ৩৭০ কোটি মার্কিন ডলারের তৈরি পোশাক রফতানি করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে রফতানি করেছে ১৮০০ কোটি ডলার মূল্যের তৈরি পোশাক। যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি বেড়েই চলছে। সঙ্গত কারণেই যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশকে শুল্ক ও কোটামুক্ত রফতানি সুবিধা দিয়েছে। এ সুবিধা অব্যাহত থাকা প্রয়োজন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে এখন যুক্তরাজ্যের প্রায় ২০টি কোম্পানির বিনিয়োগ রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যে ১০০টি স্থানে স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে। যুক্তরাজ্য এখানে বিনিয়োগ করলে বাংলাদেশ সরকার প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে। একই দিনে তোফায়েল আহমেদ আঙ্কটাডের মহাসচিব ড. মুখিসা কিটুয়ির সঙ্গে বৈঠক করেন। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের বাণিজ্য সক্ষমতা বাড়াতে আঙ্কটাডের সহযোগিতা প্রয়োজন। ড. মুখিসা কিটুয়ি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেন। এর আগে ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক মিস আরানচা গঞ্জালিজ তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি নারীদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততা বাড়ানোর আহ্বান জানান। এ সময় বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রফতানি খাত তৈরি পোশাক শিল্পের ৮০ ভাগ কর্মীই নারী।