Home বাংলা নিউজ প্রবাসী আয়ে পতন ২.৫৫ শতাংশ

প্রবাসী আয়ে পতন ২.৫৫ শতাংশ

প্রবাসী-আয়ে-পতন-২-৫৫-শতাংশ

এক বছরের ব্যবধানে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সে ধাক্কা লেগেছে। সদ্য বিদায়ী ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ২ দশমিক ৫৫ শতাংশ কম প্রবাসী আয় এসেছে। তার আগে গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরেও প্রবাসী আয়ে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছিল।

দেশের ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে বিদায়ী ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেশে ১ হাজার ৪৯২ কোটি ৬২ লাখ মার্কিন ডলারের প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স এসেছে, দেশীয় মুদ্রায় যা প্রায় ১ লাখ ১৯ হাজার ৯০৪ কোটি টাকার সমান। গত ২০১৪-১৫ অর্থবছর ১ হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল। সেই হিসাবে সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে ২ দশমিক ৫৫ শতাংশ কম প্রবাসী আয় এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এমনটাই জানা গেছে। ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, জনশক্তি রপ্তানিতে ধস, তেলের দরপতনের কারণে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর আর্থিক সক্ষমতা হ্রাস, বিপুল পরিমাণ শ্রমিকের দেশে ফেরত আসা ও ক্ষুদ্র অঙ্কের প্রবাসী আয় হুন্ডির মাধ্যমে দেশে আসায় ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ কমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ অর্থবছরের ১২ মাসের (জুলাই-জুন) মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৪৬ কোটি ২৬ লাখ ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে গত জুনে। পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে রমজান মাসে বরাবরই প্রবাসী আয় বেশি পরিমাণে আসে বাংলাদেশে। গত বৃহস্পতিবার দেশে ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হয়। তবে এবার ঈদের আগে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে প্রবাসী আয় আসেনি, বলছেন কর্মকর্তারা।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, জুন মাসে রাষ্ট্রীয় মালিকানার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৪৪ কোটি ৮২ লাখ ডলার প্রবাসী আয় এসেছে। গত মে মাসে এই ব্যাংকগুলো ৩৮ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এনেছিল। এর মধ্যে অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৬ কোটি ডলার। বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে জুনে ১ কোটি ৩৯ লাখ ডলার প্রবাসী আয় এসেছে। একই সময়ে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৯৮ কোটি ৫১ লাখ ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। আর বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছে ১ কোটি ৫৪ লাখ ডলার।

২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে প্রতি বছরই প্রবাসী আয় বাড়তে থাকে। তবে ২০১২-১৩ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ নেতিবাচক হতে শুরু করে। সেই ধারাবাহিকতায় পরের অর্থবছর ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়। তবে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পরিমাণ প্রবাসী আয় আসে। তবে পরের বছরই অর্থাৎ বিদায়ী অর্থবছরে আবার প্রবাসী আয় ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধির দিকে চলে যায়।

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) ৩ লাখ ৭২ হাজার ৮৯৫ জন বিভিন্ন দেশে চাকরি নিয়ে গেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১ লাখ ২ হাজার ৩২০ জন গেছেন ওমানে। গত বছর বিভিন্ন দেশে কর্মসংস্থান হয়েছে ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৮৮১ বাংলাদেশির।

মন্ত্রণালয়ের তথ্য হচ্ছে, ১৯৭৬ সাল থেকে গত জুন পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি বাংলাদেশি বিভিন্ন দেশে চাকরি নিয়ে গেছেন। তবে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৩০টি দেশের প্রবাসী আয় পর্যবেক্ষণ করে বিশ্বব্যাংক এক প্রতিবেদনে বলেছে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ৭৬ লাখ বাংলাদেশি বসবাস করে। বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ হলো পঞ্চম বৃহত্তম দেশ, যাদের এত বিপুলসংখ্যক প্রবাসী রয়েছে।