Home বাংলা নিউজ চীনে ১৭ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা চেয়েছে বাংলাদেশ

চীনে ১৭ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা চেয়েছে বাংলাদেশ

*বিনিয়োগের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল চায় চীন, *অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে এক হাজার মোটরসাইকেল দিচ্ছে চীন, *৭ প্রকল্পে বিনিয়োগের দ্রুত সুরাহার তাগিদ বাংলাদেশের

bangladesh china

চীনের বাজারে ১৭টি পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা চেয়েছে বাংলাদেশ। এসব পণ্য বস্ত্র, চামড়া, ব্যাটারি ও তামাক খাতের। এ বাজারসুবিধা দিতে নীতিগতভাবে রাজি হয়েছে চীন। এ জন্য বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকতা শুরু করতে বলেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল চেয়েছে চীন। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) সভায় এ প্রস্তাবগুলো উভয় পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে। শেরেবাংলা নগরের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে ইআরডি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন ইআরডি সচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন। চীনের নেতৃত্ব দেন ওই দেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার গাও ইয়ান। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন বলেন, ‘বর্তমানে চীনের বাজারে ৭ হাজার ৭০০ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া যায়। আমরা আরও ১৭টি পণ্যে এ সুবিধা চেয়েছি। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) আওতায় স্বল্পোন্নত দেশের জন্য ৯৭ শতাংশ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধার আলোকে চীন বিষয়টি বিবেচনা করবে।’ তিনি আরও জানান, বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী হলেও চীন দুটি বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছে। এগুলো হলো জমির সমস্যা এবং নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানির প্রাপ্যতা।

এক হাজার মোটরসাইকেল: অগ্নিকাণ্ড দ্রুত নিয়ন্ত্রণের জন্য শহরাঞ্চলের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার সরু রাস্তায় চলাচলের উপযোগী এক হাজার ‘ওয়াটার মিস্ট ফায়ার মোটরসাইকেল’ দেবে চীন। এসব মোটরসাইকেল সরু রাস্তায় দ্রুত অগ্নিকাণ্ডের স্থানে পৌঁছাতে পারে। মোটরসাইকেলগুলো অনুদান হিসেবে পাবে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে জেইসি সভায় উভয় পক্ষের মধ্যে দুটি বিনিময়পত্র স্বাক্ষর হয়। এতে দুই দেশের প্রতিনিধিদলের প্রধানেরা সই করেন। এর আগে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরকে ৫০টি আধুনিক অ্যাম্বুলেন্সসহ বিভিন্ন উদ্ধার-যন্ত্রপাতি দিয়েছিল চীন।

বিনিয়োগ: জেইসি সভায় বিনিয়োগ, বিনিয়োগে জটিলতা, চীনের ঋণ-প্রক্রিয়া সহজীকরণ, দরপত্র প্রক্রিয়া—এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। সভা সূত্রে জানা গেছে, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ছাড়াও প্রস্তাবিত ‘অ্যাপারেল জোনে’ বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীন। অবশ্য এর আগে এ বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এ বিষয়ে মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন বলেন, চীন এখন উচ্চমূল্যের পোশাক তৈরির দিকে যাচ্ছে। তাই তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। সস্তা শ্রমের কারণে চীনের বিনিয়োগের ভালো গন্তব্য এখন বাংলাদেশ।

চীনের অর্থায়ন প্রকল্পে দরপত্র প্রক্রিয়ায় দীর্ঘদিন ধরেই জটিলতা চলছে। এ ধরনের প্রকল্পে ঠিকাদার সাধারণত চীন সরকারই ঠিক করে দেয়, যা বাংলাদেশের সরকারি ক্রয় আইনের পরিপন্থী। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই একটি সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে আসছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে লিমিটেড টেন্ডার মেথড (এলটিএম) পদ্ধতি বা চীনা ঠিকাদারদের মধ্যে প্রতিযোগিতার পদ্ধতি অনুসরণের প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু এত দিন চীনের সম্মতি পাওয়া যায়নি। গতকালের জেইসি সভায় এ প্রস্তাব আবারও দেওয়া হলে চীনা প্রতিনিধিদল নীতিগতভাবে রাজি হয়।জানা গেছে, সাতটি প্রকল্পে বিনিয়োগের প্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে নিতে তাগিদ দিয়েছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া বিল্ড, ওন, অপারেট ও ট্রান্সফার (বিওওটি) পদ্ধতিতে বড় প্রকল্পে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে চীন।