বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ে রুয়ান্ডায় আয়োজিত বৈঠকে প্রায় ২০০ দেশ দ্রুত গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ কমাতে একটি ‘ঐতিহাসিক’ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। রেফ্রিজারেটর, এয়ারকন্ডিশন ও অ্যারোসল স্প্রেগুলোতে গ্রিনহাউজ গ্যাস হাইড্রোফ্লোরোকার্বন (এইচএফসি) ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এ গ্যাসগুলো কার্বন ডাই অক্সাইডের চেয়ে ১০ হাজার গুণ বেশি তাপ ধারণ করে।
রুয়ান্ডার রাজধানী কিগালিতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত প্রতিনিধিরা মন্ট্রিল প্রটোকলের কিছু সংশোধনী এনেছে। ২০১৯ সাল থেকে ধনী দেশগুলো এইচএফসি গ্যাসের ব্যবহার কমিয়ে দেবে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেন, পৃথিবীর জন্য এটি একটি বড় বিজয়। জলবায়ু পরিবর্তনের গতি ধীর করতে এটি স্মরণীয় পদক্ষেপ। এ চুক্তির ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি শূন্য দশমিক ৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত কমিয়ে ফেলা সম্ভব।
এ চুক্তি অনুযায়ী সম্পদের ওপর ভিত্তি করে দেশগুলোকে তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে ক্ষতিকর গ্যাসগুলো কমিয়ে ফেলতে সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো অপেক্ষাকৃত ধনী দেশগুলোকে বলা হয়েছে এইচএফসি গ্যাসের ব্যবহার ২০১৯ সাল থেকে ১০ শতাংশ কমিয়ে ফেলতে হবে।
চীন, লাতিন আমেরিকার দেশ ও দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো ২০২৪ সাল পর্যন্ত এ গ্যাসের ব্যবহার অপরিবর্তিত রাখবে। আর ভারত, পাকিস্তান, ইরান, ইরাক ও উপসাগরীয় দেশগুলো ২০২৮ সাল পর্যন্ত এ গ্যাসের ব্যবহার অপরিবর্তিত রাখবে। কারণ তাদের এ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আরো সময় লাগবে।
চীন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি এইচএফসি উৎপাদনকারী দেশ। ২০২৯ সালের আগে চীন এইচএফসি উৎপাদন বন্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবে না। ভারতও পরে শুরু করবে এ প্রক্রিয়া। ২০৩২ সালের মধ্যে প্রথম ১০ শতাংশ এইচএফসি গ্যাসের ব্যবহার কমিয়ে ফেলবে তারা। চুক্তিটি বাস্তবায়িত হলে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি অনেকটা কমিয়ে ফেলা সম্ভব হবে। বিশেষজ্ঞদের হিসাব মতে, ২০৫০ সালের মধ্যে ৭ হাজার টন কার্বন ডাই অক্সাইড পৃথিবী থেকে কমিয়ে ফেলা সম্ভব।