বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সহায়তার জন্য আগামী ৫ বছরের কৌশলপত্র ঘোষণা করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। ২০১৬ থেকে ২০২০ মেয়াদে এ কৌশলপত্রের আওতায় ৮০০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা দেবে সংস্থাটি। বর্তমান বিনিময় হার প্রতি ডলার ৮০ টাকা অনুযায়ী এর পরিমাণ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। এর আগের পাঁচ বছরে প্রায় ৫০০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে ম্যানিলাভিত্তিক এ উন্নয়ন সহযোগী।
গতকাল বৃহস্পতিবার সংস্থাটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী বছরগুলোতে রেলের সক্ষমতা বাড়ানো, নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি, চট্টগ্রাম বন্দর উন্নয়ন, ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন-সংক্রান্ত প্রকল্পে বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয় করা হবে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও বিতরণ, আঞ্চলিক জ্বালানি বাণিজ্য, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবস্থার উন্নয়ন, পানি ও নগর সেবা বাড়ানো, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলবায়ু সহনশীল গ্রাম্য অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষা এবং দক্ষতার উন্নয়ন-সংক্রান্ত প্রকল্প বাস্তবায়নে এ অর্থ খরচ করা হবে।
ঢাকায় নিযুক্ত এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর কাজুহিকো হিগুচি বলেন, এমডিজি অর্জনের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূর করেছে ও মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। নতুন এ কৌশলপত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের নতুন আয়ের উৎস তৈরির মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও পল্লী উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করবে এডিবি।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে জানা গেছে, এডিবির ঋণের মধ্যে সহজ শর্তে ৫০০ কোটি ডলার ও কিছুটা কঠিন শর্তে ৩০০ কোটি ডলার দেওয়া হবে। আগামী ৫ বছরে বর্ধিত সহায়তা নিতে ইতিমধ্যেই সম্মতি দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। গত ২৩ আগস্ট সম্মতিপত্রে সই করেন তিনি। এডিবি উইংয়ের এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, দোহাজারী ঘেকে গুনদুম রেললাইন নির্মাণের মতো মেগা প্রকল্পে এডিবি বড় অঙ্কের অর্থ দিচ্ছে। আরও কয়েকটি প্রকল্প পাইপলাইনে আছে। এসব প্রকল্পে ৮০০ কোটি ডলারের বেশি অর্থ প্রয়োজন। এর বাইরে অতিরিক্ত অর্থ প্রয়োজন হলে সংস্থাটির কাছ থেকে তা পাওয়া যাবে।
১৯৭৩ সালে এডিবির সদস্যপদ লাভের পর থেকে এ যাবৎ বাংলাদেশকে ১৬ বিলিয়ন ডলারের অধিক ঋণ দিয়েছে সংস্থাটি। এদিকে অপর উন্নয়ন সহযোগী বিশ্বব্যাংকও সম্প্রতি বাংলাদেশের জন্য আর্থিক সহায়তার কৌশলপত্র ঘোষণা করেছে। বর্তমানে তিন বছর মেয়াদি কৌশলপত্রের আওতায় বাংলাদেশকে ৪০৩ কোটি ডলার সহায়তা দিচ্ছে সংস্থাটি। আর নতুন কৌশলপত্র অনুযায়ী অর্থাৎ, আগামী তিন বছরের (২০১৭-২০১৯ সাল পর্যন্ত) জন্য ৫০০ কোটি ডলার দেবে সংস্থাটি।