বাংলাদেশে বড় বিনিয়োগে আগ্রহী সৌদি আরব। এজন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করতে আগ্রহী দেশটি। ইতোমধ্যে আল বাওয়ানি কোম্পানি লিমিটেডের মাধ্যমে সৌদি-জিসিসি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। গত জুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জেদ্দা সফরকালে সৌদি বিনিয়োগের সমঝোতার ধারাবাহিকতায় সৌদি আরবের এই অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের প্রস্তাব এসেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। প্রাথমিকভাবে বঙ্গোপসাগরের নিকটে মিরসরাই অঞ্চলে এই বিনিয়োগ প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে দুই হাজার একর জমি চিহ্নিত করেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে একশটি অর্থনৈতিক অঞ্চল করার যে লক্ষ্য নিয়ে এগুচ্ছে সরকার, তাতে মিরসরাইয়ের চর অঞ্চলে ইতোমধ্যে চারটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ শুরু হয়েছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্যাস সংযোগের বিষয়ে তিতাসের সঙ্গে চুক্তিও হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের নিকটে হওয়ায় এই অঞ্চলে বিনিয়োগ আগ্রহ বাড়ছে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের। এলক্ষ্যে সৌদি আরবের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনে মিরসরাইকে প্রাথমিকভাবে বেছে নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমান বিশ্বে তেলের দামের উত্থান-পতনে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর অর্থনীতির কাঠামোয় বড় পরিবর্তন আসছে। সৌদি ধনকুবেররা তাদের বিনিয়োগের ক্ষেত্র তেল থেকে সরিয়ে অন্যান্য খাতে নেওয়ার ওপর অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। পাশাপাশি সৌদি ব্যবসায়ীরা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাইরে অন্যান্য দেশে বিনিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছেন। এরকম প্রেক্ষাপটে সৌদি আরবের ব্যবসায়ীদের জন্য বাংলাদেশ একটি বড় বিনিয়োগের স্থান হতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করেও তাদের বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কালিয়াকৈর বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে তারা বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এছাড়া কর্ণফুলী পেপার মিলসের যৌথ উদ্যোগে একটি কারখানা এবং বিদ্যুৎকেন্দ্র, সিমেন্ট কারখানাসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ আগ্রহ প্রকাশ করেছে বেজা। এ বিষয়ে বেজার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেন, বিনিয়োগের জন্য জমি দেওয়ার দায়িত্ব বেজার। কিন্তু এই অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগ আকর্ষণে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশের মিশনগুলোকে আরো গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের বিনিয়োগ সম্ভাবনাগুলো ব্যবসায়ীদের মাঝে তুলে ধরতে হবে। কর্ণফুলী নদীর নীচে টানেল নির্মাণ, আনোয়ারায় চীনের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষ হলে চট্টগ্রাম হয়ে উঠবে বিনিয়োগকারীদের আদর্শ স্থান। বিশেষ করে মিরসরাইকে ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিটি’ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে বেজা এগিয়ে যাচ্ছে।