বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে সাম্প্রতিক অসন্তোষের কারণে গভীর উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে পোশাকের বহুজাতিক খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান সুইডেনভিত্তিক হেইনস অ্যান্ড মরিটজ (এইচঅ্যান্ডএম)। শুধু এইচঅ্যান্ডএম নয়, পোশাক বিক্রেতা ২০টিরও বেশি ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানের মধ্যেও একই রকম উদ্বেগ রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে তারা শ্রমিক অসন্তোষের কারণ সামাজিক সংলাপের মাধ্যমে চিহ্নিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। একই সঙ্গে অসন্তোষ থেকে পোশাক খাতকে সুরক্ষা দিতে নিয়মিত মজুরি পর্যালোচনার প্রস্তাব রেখেছেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের কাছে দেয়া এক চিঠিতে ব্র্যান্ড ক্রেতাগুলো তাদের এই উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বরাবর পাঠানো ব্র্যান্ড কোম্পানির ওই যৌথ চিঠিতে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্বেগ থেকে রক্ষা করতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শ্রমিকদের নিয়মিত মজুরি পর্যালোচনার দাবি জানিয়েছে। সম্প্রতি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এইচঅ্যান্ডএম এক বিবৃতির মাধ্যমে এসব তথ্য জানিয়েছে। জানা গেছে, ওই চিঠিতে ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে এ দেশের তৈরি পোশাক খাতে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ মনোযোগ আহ্বান করা হয়। তারা শ্রম অধিকার নিশ্চিত করতেও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে যেসব আইনসঙ্গত শ্রমিক প্রতিনিধি গ্রেফতার হয়েছেন, তাদের বিষয়ে বিশেষ মনোযোগ দেয়ার আহ্বান রাখেন। ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো বিবৃতিতে জানায়, ‘আমরা স্পষ্ট জানাতে চাই- কোনো ধরনের অবৈধ ধর্মঘট বা সহিংস প্রতিরোধ আমরা সমর্থন করি না।’ চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে জীবনযাপন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় পোশাক শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়ে থাকতে পারে। এ ক্ষেত্রে নিয়মিত মজুরি পর্যালোচনা বাংলাদেশের পোশাক খাতে স্থিতিশীলতা আনতে সহায়তা করতে পারে। এইচঅ্যান্ডএমের এ সংক্রান্ত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ঢাকায় আমাদের কর্মীরা উদ্ভূত পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। এতে পোশাক সরবরাহকারী ও শিল্পসংশ্লিষ্ট সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন ও অন্যান্য ক্রেতার সহযোগিতাও নেয়া হচ্ছে। সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন কারখানা চালুর পর সেখানে উৎপাদন শুরু হয়েছে। কারখানা ব্যবস্থাপনা, ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিনিধি ও (পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন) বিজিএমইএ বর্তমানে বরখাস্ত শ্রমিকদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’সব দেশে উন্নত কর্মপরিবেশে পণ্য প্রস্তুত হওয়া এইচঅ্যান্ডএমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, বৈশ্বিক চুক্তির মাধ্যমে শিল্প আইন ও সুইডেনের ট্রেড ইউনিয়নের সঙ্গে এ বিষয়ে এইচঅ্যান্ডএম প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। শ্রমবাজারের সব পক্ষের মধ্যে কার্যকর সামাজিক সংলাপ ও যৌথ দরকষাকষির চুক্তি এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানে এ লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী আমাদের ‘লিভিং ওয়েজ’ কৌশল টেক্সটাইল শিল্পে ন্যায্য লিভিং ওয়েজ নির্ধারণের লক্ষ্যে নেয়া হয়েছে, যা প্রতিবছর মজুরি পুনঃপর্যালোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার দাবি রাখে।
পোশাক খাতে শ্রমিক অসন্তোষে ২০ ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের উদ্বেগ
প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি