বেক্সিমকো গ্রুপের বস্ত্র ও পোশাক কারখানায় কাজ করেন অনেক শ্রমিক। এর মধ্যে চার শতাধিক শ্রমিক বিকলাঙ্গ। এদের মধ্যে কেউ জন্মগত, কেউবা দুর্ঘটনার শিকার হয়ে বিকলাঙ্গের ভাগ্য বরণ করেছেন। তবে শারীরিক এ প্রতিবন্ধকতা তাদের কর্মোদ্যমকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। বরং সুবিধাজনক কাজের সুযোগ পেলে তারা স্বাভাবিক শ্রমিকের মতোই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন উৎপাদনে। শুধু তা-ই নয়, বিকলাঙ্গ শ্রমিকরা শিল্পের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করছেন বলে জানিয়েছেন তাদের নিয়োগদাতা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ২০১০ সালে গ্লোবাল বিজনেস ডিজঅ্যাবিলিটি নেটওয়ার্ক শীর্ষক প্লাটফর্ম গঠন করে। এর আওতায় বাংলাদেশে পরিচালিত হচ্ছে বাংলাদেশ বিজনেস অ্যান্ড ডিজঅ্যাবিলিটি নেটওয়ার্ক (বিবিডিএন)। দেশে নেটওয়ার্কটির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের (বিইএফ) আওতায়। ১১ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিবিডিএন নেটওয়ার্কের উদ্বোধন করেন, যা গতকাল একটি কর্মশালা আয়োজনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক যাত্রা করে। ‘মেকিং ওয়ার্কপ্লেস ডিজঅ্যাবিলিটি ইনক্লুসিভ: ডেভেলপিং এমপ্লয়ার্স নেটওয়ার্ক’ শীর্ষক কর্মশালাটিতে বিশ্বব্যাপী ও স্থানীয়ভাবে শিল্পের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে বিকলাঙ্গ শ্রমশক্তি অবদান সম্পর্কিত তথ্য জানানো হয়।
এতে জানানো হয়, বাংলাদেশের মোট জনগোষ্ঠীর ১০ শতাংশ শারীরিকভাবে বিকলাঙ্গ। এ হিসাবে দেশে ১ কোটি ৬০ লাখ বিকলাঙ্গ রয়েছে। এর ৪০ শতাংশই যুব সম্প্রদায়। প্রায় একযুগ ধরে বিকলাঙ্গ যুব সম্প্রদায়কে কর্মসংস্থানে যুক্ত করতে শুরু করেছেন দেশী উদ্যোক্তারা। এখন পর্যন্ত মোট ৯৩টি প্রতিষ্ঠান বিকলাঙ্গ শ্রমশক্তি কাজে লাগাচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেক্সিমকো গ্রুপ, কেয়া গ্রুপ, ভিয়েলাটেক্স, ভিনটেজ ডেনিম, রেনাটা ও এবি ব্যাংক উল্লেখযোগ্য।
বিইএফের সভাপতি সালাউদ্দিন কাশেম চৌধুরী বলেন, ডিজঅ্যাবল কর্মীরা কর্মক্ষেত্রে দক্ষতা ও বৈচিত্র্য নিয়ে আসেন। এ ধরনের কর্মী নিয়োগের মাধ্যমে বৃহত্তর সামাজিক অন্তর্ভুক্তিকরণ সম্ভব। বাংলাদেশের অনেক প্রতিষ্ঠান এ ধরনের কর্মী নিয়োগের মাধ্যমে নিজেদের সক্ষমতা কাজে লাগিয়েছেন। আইএলওর প্রতিনিধি কিশোর কুমার সিং বলেন, দেখা গেছে ডিজঅ্যাবল কর্মীদের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায় ২০ শতাংশ। বাংলাদেশে কেয়া, ভিয়েলাটেক্সের ক্ষেত্রে একই ধরনের ফল পাওয়া গেছে। অনুষ্ঠানে ভিয়েলাটেক্সের চেয়ারম্যান ডেভিড হাসনাত, বেক্সিমকো টেক্সটাইলসের ম্যানেজার সৈয়দ শাকিল আহাদসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।