মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে দেদার বিক্রি হচ্ছে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক। এ দেশের পোশাক নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর নাগরিকদের মধ্যে রয়েছে ব্যাপক আগ্রহ। যার সুবিধা নিয়ে সেখানে বাংলাদেশের পোশাকের বড় বাজার তৈরি করা সম্ভব। বাংলাদেশি পোশাক বিক্রেতারা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, বাংলাদেশি পণ্যের দাম কম, আবার গুণগতমানও ভালো। বাংলাদেশের পণ্যের রং ও বৈচিত্র্য এককথায় অসাধারণ। এখানকার লোকজন দোকানে এসে বাংলাদেশের পোশাক খুঁজে। সৌদি আরবের সীমান্তবর্তী এলাকা আল হাসা শহরে বাংলাদেশি পোশাকের রয়েছে প্রায় দেড় শতাধিক দোকান। এলাকাটি সীমান্তবর্তী হওয়ার কারণে সৌদিরা ছাড়াও বাহরাইন, কুয়েত, কাতারের নাগরিকরা আসেন সেখানে এবং তারা বাংলাদেশি পোশাক পছন্দ করেন।
গুণগতমান, আরামদায়ক আর সাশ্রয়ী দামের জন্য অভিবাসীদের কাছে বাংলাদেশের পণ্য খুবই জনপ্রিয়। তবে বাংলাদেশের এই গার্মেন্ট পণ্যের বাজার এখানে প্রসার করতে সৌদিতে আরও বেশি পণ্য সরবরাহ করার জন্য বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ও সৌদি ব্যবসায়ীদের মধ্যে সঠিক কর্মপরিকল্পনা অনেক বেশি জরুরি বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে পোশাক আনার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে প্রথম শিপমেন্টের সঙ্গে পরের শিপমেন্টের মালের ব্যাপক তারতম্য থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রথম শিপমেন্টে ভালো মানের পোশাক পাওয়া গেলেও পরের শিপমেন্টে সেটা পুরোপুরি ঠিক থাকে না। ’ সৌদি আরবের রিয়াদ, জেদ্দা, মদিনা, দাম্মাম, আল হাসাসহ বড় বড় শহরে গড়ে উঠেছে বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের বাজার। গুণগতমান ধরে রাখতে পারলে অল্প সময়ের মধ্যে সৌদি আরবে বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের একচেটিয়া বাজার ধরাও সম্ভব বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা। এখানকার ব্যবসায়ীরা মনে করেন, বিশ্ববাজারে গার্মেন্ট তথা তৈরি পোশাক বিক্রির ক্ষেত্রে এত দিনের শক্ত অবস্থান থেকে সরে আসছে বাংলাদেশ। এ প্রসঙ্গে ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘আমরা পোশাক অর্ডার করার পর প্রথম শিপমেন্টের মালগুলো খুব ভালো পাই, এরপর থেকেই পণ্যের কোয়ালিটি আগের মতো থাকে না। যার কারণে আমরা বাজার হারাচ্ছি। ’
রিয়াদ বাংলাদেশ দূতাবাসের ইকোনমিক কাউন্সিলর মোহাম্মদ আবুল হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘গার্মেন্টসহ সৌদি আরবে বাংলাদেশি অন্যান্য পণ্যের বাজার সৃষ্টি করতে বি টু বি (বিজনেস টু বিজনেস) যোগাযোগ অব্যাহত আছে। এরই অংশ হিসেবে আগামী কিছু দিনের মধ্যেই বাংলাদেশ থেকে একটি ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দল সৌদি আরব আসার কথা রয়েছে। ’
বাংলাদেশি পণ্য আমদানিকারক সমিতি রিয়াদের সভাপতি কাপতান হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘এখানে বাংলাদেশি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। রিয়াদের উজির মার্কেটে বাংলাদেশি কাপড়ের ৫ শতাধিক পাইকারি দোকান আছে যেখান থেকে কাপড়গুলো সৌদি আরবের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হয়। ’
তিনি আরও বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা অল্প পরিমাণ পণ্য দ্রুত নিয়ে আসার জন্য আকাশপথ বেছে নেন। কিন্তু ঢাকা বিমানবন্দরে একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নানা অজুহাতে ভাড়া দিগুণ করে ফেলেন। বিমানে যেখানে কেজি ১০০ টাকা ভাড়া সেখানে ওই সিন্ডিকেটের কারণে ২০০ টাকা দিতে হচ্ছে। ’ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এদিকে নজর দেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।