ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় আন্দোলনের পর চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। সংগঠনটি এ ঘটনায় শ্রমিকনেতা ও সাধারণ শ্রমিকদের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিকদের মুক্তি দাবি করেছে। রাজধানীর তাহের মিলনায়তনে গতকাল রোববার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনটির নেতারা। এতে বাজার দরের সঙ্গে সংগতি রেখে পোশাক খাতসহ সব খাতের শ্রমিকদের বেঁচে থাকার মতো ন্যায্য মজুরি দেওয়া, অবাধে ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার নিশ্চিত করার দাবিও করা হয়। গত ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝিতে আশুলিয়া এলাকার কিছু কারখানার শ্রমিকেরা মজুরি বাড়ানোসহ বিভিন্ন দাবিতে ধর্মঘট পালন করেন। এতে ৫৯টি কারখানা কয়েক দিন বন্ধ ছিল। এ আন্দোলনের জেরে দেড় হাজারের বেশি শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতেই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে স্কপ। এতে লিখিত বক্তব্যে স্কপের যুগ্ম সমন্বয়কারী চৌধুরী আশিকুল আলম বলেন, জীবনযাত্রার সমস্ত ক্ষেত্রে ব্যয় শ্রমিকদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। কিন্তু বাজার দরের সঙ্গে সংগতি রেখে শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানো হচ্ছে না। দেশের রপ্তানি আয়, মাথাপিছু আয় বাড়ছে, কিন্তু শ্রমিকের আয় বাড়ছে না। আশুলিয়ার আন্দোলন প্রসঙ্গে আশিকুল আলম বলেন, বিক্ষোভের মূল কারণ অনুসন্ধান ও দূর করার পদক্ষেপ না নিয়ে সরকার ও মালিকেরা শ্রমিকদের পুলিশ দিয়ে দমন করার পথে গেছেন। এ ধরনের দমনমূলক পদক্ষেপ ভবিষ্যতে আরও সমস্যার জন্ম দিতে পারে। মামলা প্রত্যাহার, গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দেওয়া ও ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের চাকরিতে পুনর্বহাল করা হলে তাঁদের মধ্যে আস্থা ফিরবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। পাঁচ বছরের আগে নতুন মজুরি বোর্ড গঠনে কোনো আইনগত বাধা নেই বলেও উল্লেখ করেন আশিকুল আলম। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে মালিকেরা প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছেন যে পাঁচ বছরের আগে মজুরি বোর্ড গঠন করা যায় না। স্কপের যুগ্ম সমন্বয়কারী মেসবাহ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি শহিদুল্লা চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ওয়াজেদুল ইসলাম খান, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন বাংলাদেশের সভাপতি কামরুল আহসান, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি জাহিদুল হকসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।