ডিসেম্বরে আশুলিয়ায় শ্রম অসন্তোষকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবেলায় এরই মধ্যে সরকার-মালিক-শ্রমিক একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। পোশাক খাত মূল্যায়নকারী উত্তর আমেরিকাভিত্তিক ক্রেতাজোট অ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স সেফটি চুক্তিটির যথাযথ বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে। সম্প্রতি এক বিবৃতির মাধ্যমে অ্যালায়েন্স এ আহ্বান জানায়।
ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ ও পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকার মতো ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আশুলিয়ায় শ্রমিক আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। এ আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে বহু সংখ্যক শ্রমিকনেতাকে গ্রেফতার ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ ঘটনার কয়েক সপ্তাহ পর ত্রিপক্ষীয় চুক্তিটি সম্পাদিত হয়। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল বাংলাদেশ কাউন্সিলের (আইবিসি) মধ্যে সম্পাদিত এ চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে অ্যালায়েন্স।
জোটটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চুক্তিবদ্ধ তিন পক্ষই আটক ব্যক্তিদের মুক্তি দেয়া, বন্ধ আঞ্চলিক অফিস পুনরায় খোলা ও আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের মজুরি প্রদান অথবা তাদের পুনরায় কাজে নিয়োগদানের বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছে। স্বাক্ষরকারী সবাই মালিকপক্ষ ও শ্রমিকদের মধ্যে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে পোশাক কারখানাগুলোয় টেকসই সম্পর্ক নিশ্চিতকরণে প্রতিশ্রুতবদ্ধ হয়েছেন।
অ্যালায়েন্সের কান্ট্রি ডিরেক্টর জিম মরিয়ার্টির বরাত দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয় ‘আমরা অত্যন্ত উত্সাহিত যে, আলোচানার মাধ্যমে একটি গঠনমূলক চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। আমরা এ চুক্তির সঠিক বাস্তবায়নে উত্সাহ প্রদান করছি। এছাড়া আমরা সব পক্ষকে আহ্বান জানাচ্ছি, ভবিষ্যতেও যেন অনিষ্পত্তি বিষয় ও মতানৈক্য একইভাবে আলোচনার টেবিলে বসে বাংলাদেশের আইন অনুসারে নিষ্পন্ন করা হয়।’
শ্রমিকদের সংগঠন করার অধিকারের প্রতি অ্যালায়েন্সের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে— এমন মন্তব্য করে বিবৃতিতে বলা হয়, অ্যালায়েন্সের সদস্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে সম্পাদিত আনুষ্ঠানিক চুক্তি অনুযায়ী, যেকোনো বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে শ্রমিকরা কাজে অস্বীকৃতি জানাতে পারেন। অ্যালায়েন্স তার বোর্ড লেবার কমিটির সঙ্গে শ্রমিকদের যেকোনো বিষয় নিয়ে ঘনিষ্ঠভাবে আলোচনা করে বলে জোটটি দাবি করেছে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের জুলাই নাগাদ অধিকাংশ অ্যালায়েন্স কারখানায় একটি করে ওয়ার্কার সেফটি কমিটি গঠন করা হবে। এসব কমিটিতে থাকবেন একদল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শ্রমিক, যারা কারখানার পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সমস্যা পর্যালোচনা করবেন।