পোশাক খাতের কারখানাগুলোতে গড়ে ২১ শতাংশ জ্বালানি সাশ্রয় করা সম্ভব বলে জানিয়েছে দ্য এনার্জি এফিসিয়েন্সি এনগেজমেন্ট (থ্রি ই)। এতে বছরে দেড় লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ সাশ্রয় হবে। বাংলাদেশের পোশাক খাতের ৪২টি কারখানার ওপর পর্যালোচনা করে এ তথ্য দিয়েছে ডেনমার্কভিত্তিক সংস্থাটি। থ্রি ই এবং ঢাকার ডেনমার্ক দূতাবাস যৌথভাবে গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে ‘রিনিউয়েবল এনার্জি, এনার্জি এবং ওয়াটার এফিসিয়েন্সি’ শীর্ষক একটি সেমিনারে এসব তথ্য তুলে ধরে। বাংলাদেশে তৈরি পোশাক খাতে জ্বালানি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং পানির সদ্ব্যবহার উৎসাহিত করতে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের সচেতন করে তোলা, এ বিষয়ে থ্রি ই’র গবেষণা ও সফলতা ডেনিশ টেকনোলজিকে উপস্থিত স্টেকহোল্ডারদের সামনে তুলে ধরা হয় সেমিনারে।
সেমিনারের শুরুতেই সবাইতে স্বাগত জানান ডেনমার্ক দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর সোরেন রোবেনহেগেন। তিনি তার বক্তব্যে টেকসই ব্যবসায়িক উন্নয়নের জ্বালানি ও পানির সদ্ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এরপর ভবিষ্যৎ বাণিজ্যিক সফলতার অন্যতম চাবিকাঠি সম্পদ ব্যবস্থাপনার ওপর উপস্থাপনা পেশ করেন নরডিক চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি শামীম-উল হক।
থ্রি ই’র প্রকল্প সম্পর্কে ডেনমার্ক ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল ও সেমিনারে অংশগ্রহণকারীদের অবগত করেন থ্রি ই’র সিনিয়র ডেনিডা অ্যাডভাইজার স্টেফান স্কেয়ারে এনাভলডসন। বিভিন্ন শিল্প খাতে জ্বালানির সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে ধারণা দেন তিনি। তিনি জানান, থ্রি ই প্রকল্প ৪২টি ফ্যাক্টরিতে সাত মিলিয়ন ইউএস ডলারের জ্বালানি সাশ্রয় করা সম্ভব বলে চিহ্নিত করেছে, যা শতকরা প্রায় ২১ ভাগ জ্বালানি সাশ্রয় করবে এবং গড়ে ১ লাখ ৫০ হাজার ইউএস ডলার সাশ্রয় হবে। পাশাপাশি কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমণের পরিমাণও হ্রাস পাবে যেটার পরিমাণ ১ লাখ টনেরও বেশি শতকরা হিসেবে যেটা গড়ে ১৮ ভাগ।
তিনি বলেন, ‘শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি অর্জনে জ্বালানি সক্ষমতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কেননা জ্বালানি শক্তি সীমিত, এর মূল্য ক্রমশ বাড়ছে এবং টেকসই উন্নয়নের চাহিদা সারাবিশ্বেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বাংলাদেশের পোশাক শিল্প এবং টেকসই উন্নয়নে এ শিল্পের অবস্থান সম্পর্কে সেমিনারে বক্তব্য রাখেন বিজিএমইএর পরিচালক মিরান আলী। এছাড়াও আইএফসি, এইচঅ্যান্ডএম, বেস্টসেলার এবং অন্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সেমিনারে টেকসই উন্নয়ন ও সক্ষমতার ওপর বক্তব্য রাখেন।
চা বিরতির পর সেমিনারে ডেনিডা বিজনেস প্রতিনিধিদের সঙ্গে উপস্থিত সব অতিথিকে পরিচয় করিয়ে দেয় হয়। প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশে কীভাবে তাদের প্রযুক্তি কাজে লাগানো যায় সে বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ উপস্থাপনা পেশ করেন।
ডেনমার্ক দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর সোরেন রোবেনহেগেনের ধন্যবাদ জ্ঞাপন বক্তব্যের মাধ্যমে সেমিনারটি শেষ হয়। মধ্যাহ্নভোজের পর ডেনিশ কোম্পানির পণ্য প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ ও ডেনিশ ব্যবসায়ীদের মধ্যে বেশকিছু বিজনেস টু বিজনেস মিটিংও অনুষ্ঠিত হয় মেলায়। সেমিনারে এই সেক্টরের প্রায় ১২০ জন অংশগ্রহণ করেন।