ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদুন বলেছেন, শ্রম অধিকার প্রশ্নে বাংলাদেশের অগ্রগতি আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হয়নি। তিনি তিনটি চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করেছেন। এগুলো হচ্ছে— সামাজিক অনুশাসনের চ্যালেঞ্জ, সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ।
সোমবার ঢাকায় মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) মধ্যাহ ভোজ সভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন। সভা সঞ্চালনা করেন এমসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবির। রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে এখনো শ্রমিক হয়রানির ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে গত ডিসেম্ব্বরে আশুলিয়ার শ্রম অসন্তোষকে ঘিরে অনেক শ্রমিক হয়রানির শিকার হয়ে কাজ হারিয়েছেন। অর্থাত্ পোশাক খাতে সুশাসন পরিস্থিতি এখনো গ্রহণযোগ্য মান অর্জন করতে পারেনি।
তিনি বলেন, কমপ্যাক্টের আগামী বৈঠক বাংলাদেশের জন্য অ্যাসিড টেষ্ট। ওই বৈঠকে ইইউ জিএসপি (শুল্কমুক্ত রফতানি সুবিধা) পর্যালোচনা হবে। প্রসঙ্গত, রানা প্লাজা ট্রাজেডির পর এ দেশের পোশাক খাতের সংস্কার উন্নয়নে ইইউ সাসটেইনেবলিটি কমপ্যাক্ট নামে একটি চুক্তি করে সরকার। এতে সংস্কার উন্নয়নে প্রতিপালনের জন্য বাংলাদেশকে ১৭টি শর্ত দেওয়া হয় বাংলাদেশকে। ইইউর সঙ্গে করা ওই চুক্তিতে পরে যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডাও যোগ দেয়। আগামী ১৮ মে ঢাকায় কমপ্যাক্টের একটি পর্যালোচনা বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ প্রসঙ্গে ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, এ দেশের বিনিয়োগ পরিবেশের উন্নয়ন প্রয়োজন। সহায়ক পরিবেশ না হলে সংখ্যায় যতই বিশেষায়িত অঞ্চল বাড়ানো হোক না কেন ইউরোপের বিনিয়োগ আসবে না। রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) সারা দেশের মত একই শ্রম আইন করার ওপর জোর দেন তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার (ব্রেক্সিট) প্রভাবে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের পরবর্তী জিএসপি প্লাস প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে।
এমসিসিআই সভাপতি নিহাদ কবির ইইউর সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি জানান, গত এক দশকে বাংলাদেশ থেকে ইইউ জোটের আমদানি তিনগুণেরও বেশি বেড়েছে। ২০০৬ সালের ৫ বিলিয়ন ডলার থেকে গত ২০১৬ সালে এ পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ১৬ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। আগামীতে এ হার বাড়াতে একসঙ্গে কাজ করতে রাষ্ট্রদূতের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।