ঈদকে সামনে রেখে আবারও বেতন-ভাতার জন্য গার্মেন্ট সেক্টরে অস্থিরতার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ গার্মেন্টসগুলোর তালিকা তৈরি করে তা সমাধানের জন্য শিল্প পুলিশের পক্ষ থেকে মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা চলছে। তারপরও কয়েকশ গার্মেন্টসের বেতন-বোনাস নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। এর মধ্যে ঢাকার আশপাশে ২শর বেশি গার্মেন্টস রয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র জানায়, প্রতি বছর রমজানের সময় রাজধানী, সাভার, আশুলিয়া, টঙ্গী, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গার্মেন্টস সেক্টরে বেতন-বোনাসের জন্য শ্রমিকরা আন্দোলন করে। তারা বিক্ষোভ ঘেরাওসহ নানা কর্মসূচি পালন করে। তাই এই বছর আগ থেকে শিল্প পুলিশ ও থানা পুলিশ এবং সাদা পোশাকের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অস্থিরতা ঠেকাতে তৎপরতা শুরু করেছে। এরপরও কয়েকশ গার্মেন্টস কারখানা গত মে মাসের বেতন দেয়নি। এরপর বোনাসসহ চলতি মাসের বেতনের জন্য উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঈদের বন্ধের আগে বোনাস দাবি করছেন শ্রমিকরা। এ নিয়ে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। মে মাসের বকেয়া বেতনসহ চলতি মাসের বেতন ভাতা ও বোনাস না দিলে শ্রমিকরা আন্দোলন, কারখানা ঘেরাও, রাস্তা অবরোধ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, ঢাকায় ও আশপাশ এলাকায় প্রায় দেড়শ গার্মেন্টস ও গাজীপুরের শিল্প এলাকায় ৭০ থেকে ৮০টি গার্মেন্টস রয়েছে। এসব গার্মেন্টসের তালিকা তৈরি করে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে।
সূত্র মতে, গার্মেন্টস সেক্টরে বকেয়া বেতন-বোনাসের দাবিতে আন্দোলনকারী শ্রমিকদের সঙ্গে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা মিলে কৌশলে এই সেক্টরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করতে পারে। তাই এবার আগ থেকে অস্থিরতা ঠেকাতে নানাভাবে তৎপরতা চালানো হচ্ছে। সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কাজ করছে। তারা প্রতিদিনের খোঁজ-খবর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাচ্ছে। এদিকে শিল্প পুলিশের একজন এসপি বলেন, গার্মেন্টস কারখানায় বকেয়া বেতন-ভাতা দেয়ার জন্য গত এক মাস ধরে শিল্প পুলিশ গার্মেন্টস মালিক পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেয়ার চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে অনেক গার্মেন্টস বেতন দিয়েছে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা দাবি করছেন। যে সব গার্মেন্টসে বেতন এখনও দেয়নি। তারা যাতে আগামী ১৬ থেকে ২০ জুনের মধ্যে বেতন বোনাস দেয় তার জন্য কাজ করছে। এই লক্ষ্যে মালিক পক্ষের সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে। টার্গেট দ্রুত বেতন বোনাস আদায়। আর অস্থিরতা ও বিক্ষোভ যাতে না হয় তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।
এ দিকে একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, গার্মেন্টস সেক্টরের অস্থিরতা ঠেকাতে বেতন ভাতা দেয়ার ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। সমস্যা হতে পারে এমন গার্মেন্টসের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তালিকা পাঠিয়েছেন। বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে গোয়েন্দা নজরদারী বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা ও আশপাশ এলাকার ঝুকিপূর্ণ গামের্ণ্টস গুলোর তালিকা ,ঠিকানা ও মালিকের নামসহ বিস্তারিত তথ্য গোয়েন্দা সংস্থা তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ পেশ করেছেন।