দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকশিল্পে গড়ে ২০ শতাংশ অর্ডার কমেছে। রপ্তানিতে বেশি সময় লাগায় বিশ্ববাজারে বাংলাদেশি পোশাক পণ্যের চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। এতে অস্বস্তি বেড়েছে পোশাকশিল্প মালিকদের। তারা জানিয়েছেন, অনেক কারখানায় কাজ কমে গেছে। বেশ কিছু কারখানা বন্ধ রয়েছে।
পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি-বিজিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহড়-সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, জুনে ১৬ দশমিক ১৩ শতাংশ রপ্তানি প্রবৃদ্ধি কমেছে। আর জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাসে গড়ে ৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ নেতিবাচক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। কম-বেশি ২০ শতাংশ অর্ডার কমে যাওয়ায় মূল্যও কমেছে। অবস্থা এখন এমন পর্যায়ে ঠেকেছে, আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি বাড়ার সম্ভাবনা নেই।
জানা গেছে, পোশাকশিল্পের সংকট উত্তরণে যখন এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তখন রপ্তানি কমেছে পোশাক খাতের। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এ খাতে রপ্তানি আয় হয়েছে ২ হাজার ৮১৫ কোটি মার্কিন ডলার। প্রবৃদ্ধির হিসাবে মাত্র শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ। এ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির পেছনে রয়েছে আন্তর্জাতিক বাজারের মন্দা, পোশাকের মূল্য কমে যাওয়া ইত্যাদি।
তথ্যমতে, বাংলাদেশি পোশাক পণ্যের সবচেয়ে বড় বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সেখানকার ক্রেতা জোট অ্যাকর্ড পোশাকশিল্পের কর্ম-পরিবেশ উন্নয়নে দ্বিতীয় মেয়াদে আরও তিন বছর থাকতে ব্র্যান্ড ও ক্রেতা-প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে নতুন চুক্তি করায় উদ্বিগ্ন সরকার ও মালিকপক্ষ। বর্তমান চুক্তিতে আগামী বছর মে মাসে অ্যাকর্ডের চলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নতুন একতরফা চুক্তির কারণে ২০২১ সালের ৩১ মে পর্যন্ত বাংলাদেশে কার্যক্রম চালাবে অ্যাকর্ড।
জানা গেছে, অ্যাকর্ডকে মোকাবিলায় নতুন উদ্যোগ নিয়েছে বিজিএমইএ। এর সঙ্গে উত্তর আমেরিকার ক্রেতা জোট অ্যালায়েন্সের কার্যক্রমও বুঝে নিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মাধ্যমে ‘সম্মান’ নামে একটি পৃথক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে অ্যাকর্ড-অ্যালায়েন্স বিড়ম্বনায় প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংসের পথে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন এই খাতে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তাদের মতে, দেশের পোশাক শিল্প আজ যে সংকটের মধ্যে আছে তার জন্য
অন্যতম দায়ী অ্যাকর্ড-অ্যালায়েন্স। তাদের রানা প্লাজা ধসের পর দেশে আনা হয়েছিল কেবল ত্রুটিগুলো দেখার জন্য। অথচ তারা এখানে কর্তৃত্ব নিচ্ছে। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) কর্তৃক আয়োজিত এক জরুরি সাধারণ সভায় তারা এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি (এফবিসিসিআই) সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, আমাদের দেশে এক শ্রেণির নেতা আছে। এরা বিদেশে গিয়ে লাল, নীল পানি খায় আর আমাদের পোশাক শিল্পের নামে বদনাম ছড়ায়।