দেশের তৈরি পোশাকশিল্পের কর্মপরিবেশ উন্নয়নে কাজ করা উত্তর আমেরিকার ক্রেতাদের জোট সংগঠন অ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার সেফটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাদের কাজ শেষ করতে চায়। তবে তাদের সদস্য ব্র্যান্ডগুলো চায়, এ দেশের পোশাক কারখানাগুলোর সংস্কারকাজ এগিয়ে নিতে নতুন প্ল্যাটফর্ম চায়। আর সেটিকে হতে হবে স্বাধীন, স্বচ্ছ ও প্রভাবমুক্ত। অ্যালায়েন্সের বর্তমান সংস্কারকাজের অগ্রগতি নিয়ে জানতে চাইলে অ্যালায়েন্সের এ দেশীয় পরিচালক ও বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি গতকাল সোমবার কালের কণ্ঠকে এসব কথা বলেন। এদিকে অ্যালায়েন্সের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, কারখানা সম্পূর্ণ সংশোধন পরিকল্পনার (সিএপি) খুব একটা অগ্রগতি নেই। আর তাই মেয়াদ শেষের আগে সংস্কারকাজ শেষ করতে কাজের গতি আগের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বাড়িয়েছেন বলে জানান মরিয়ার্টি।
তাঁর আশা আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে এবং তাঁদের এ দেশের কাজের মেয়াদের আগেই সংস্কার কার্যক্রম শেষ করতে তাঁরা কার্যক্রমকে জোরদার করছেন। ইতিমধ্যে ১৪৬টি সিএপি সম্পন্ন হয়েছে। আর চলতি বছরের মধ্যে ৩০০ থেকে ৩৫০টি কারখানা সিএপি সম্পন্ন হবে। অ্যালায়েন্সের মোট সক্রিয় কারখানার সংখ্যা ৬৭০টি।
সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের পর বাংলাদেশে অ্যালায়েন্সের কার্যক্রম পরিচালনা করার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানকে এক ই-মেইল বার্তায় জানান জেমস মরিয়ার্টি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মরিয়ার্টি কালের কণ্ঠকে এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আগামী বছর তাঁদের বাংলাদেশের কার্যক্রম পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন করে অ্যালায়েন্সের মেয়াদ বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে তাদের সদস্য ব্র্যান্ডগুলো চায়, বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলো সংস্কারকাজ তদারকিতে এমন একটি প্ল্যাটফর্ম গঠন হোক তা যেন স্বাধীন, স্বচ্ছ ও প্রভাবমুক্ত হয়।
জানতে চাইলে বিজিএমইএর সহসভাপতি মাহমুদ হাসান খান কালের কণ্ঠকে বলেন, গত সপ্তাহে অ্যালায়েন্স আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে, ৫ বছর মেয়াদ শেষে তারা থাকবে না। তবে স্বচ্ছ এবং গ্রহণযোগ্য একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম চায় তাদের ক্রেতারা। সেই প্ল্যাটফর্মের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা যিনি হবেন তাঁকে সব ধরনের প্রভাবমুক্ত হতে হবে। ওই প্ল্যাটফর্ম কেমন হবে গত সপ্তাহে বিজিএমইএ কার্যালয়ে এ বিষয়ে বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে ছিলেন অ্যালায়েন্সের কান্ট্রি ডিরেক্টর মরিয়ার্টি এবং ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের ২৫তম সাবেক রাষ্ট্রদূত রিচার্ড আর বার্মা।
মাহমুদ হাসান আরো জানান, অ্যাকর্ড এবং অ্যালায়েন্সের বিকল্প প্ল্যাটফর্ম নিয়ে আমরা কাজ করছি। ইতিমধ্যে এর কাজও অনেক এগিয়েছে। আশা করছি, চলতি বছরের মধ্যে এ বিষয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা আসবে। এর অধীনে অ্যাকর্ড এবং অ্যালায়েন্সের সদস্য কারখানাকে নিয়ে আসা হবে।
২০১৩ সালের এপ্রিলে রানা প্লাজা ধসের পর পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে পাঁচ বছরের জন্য অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স গঠিত হয়। উভয় জোটের অধীনে দুই হাজারের বেশি কারখানার অগ্নি, বৈদ্যুতিক ও ভবনের কাঠামোগত পরিদর্শন শেষ হয়।