Home Bangla Recent দূরত্ব কমানোর চেষ্টায় বিজিএমইএ ও অ্যাকর্ড

দূরত্ব কমানোর চেষ্টায় বিজিএমইএ ও অ্যাকর্ড

accord

তৈরি পোশাক কারখানা সংস্কার ও বাংলাদেশে কার্যক্রমের মেয়াদ বাড়ানো ইস্যুতে অ্যাকর্ড ও পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র মধ্যে চলমান দুরত্ব কমানোর চেষ্টা চলছে। এক্ষেত্রে উভয় পক্ষ থেকে কিছুটা ছাড় দেওয়ার আভাস মিলেছে। তবে মেয়াদ বৃদ্ধি ইস্যুতে শেষ পর্যন্ত উভয় পক্ষ একমত হতে পারবে কিনা তা এখনো অনিশ্চিত।

আগামী বছরের মে মাসে বাংলাদেশে ইউরোপের ব্র্যন্ডগুলোর সমন্বয়ে গঠিত অ্যাকর্ডের কার্যক্রমের পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে। এর আগেই গত জুনে অ্যাকর্ড একতরফাভাবে মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। এরপরই গার্মেন্টস মালিক ও সরকারের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করা হয়। ইস্যুটি নিয়ে গত মাসে ফ্রান্সে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হলেও কার্যকর সমাধান বের হয়নি। নতুন করে আলোচনা করতে অ্যাকর্ডের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্যরা ঢাকায় এসেছেন। আগামী বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে সরকার ও বিজিএমইএ’র সঙ্গে এ প্রনিতিধি দলের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

তবে চলমান কারখানা সংস্কার ইস্যুতে নিয়মিত বৈঠকের অংশ হিসেবে ওই প্রতিনিধিদলের সঙ্গে গতকাল বৈঠক হয়েছে বিজিএমইএ নেতাদের মধ্যে। বৈঠকে চলমনা সংস্কার ইস্যুতে অ্যাকর্ডের বেশকিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে আপত্তির কথা জানায় বিজিএমইএ। এর মধ্যে একই গ্রুপের একটি কারখানার সঙ্গে ব্যবসা বাতিল হওয়ার পর অন্য কারখানাকেও বাতিলের তালিকায় রাখা, অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের যৌথ তদারকির মধ্যে থাকা কারখানা একক মানদণ্ডে সংস্কার হওয়ার পর তা অন্য পক্ষ কর্তৃক না মানার বিষয়ে আপত্তি জানানো হয়। এছাড়া প্রাথমিক ভাবে একটি কারখানার সংস্কার পরিকল্পনা (কারেকটিভ অ্যাকশন প্ল্যান বা ক্যাপ) অনুযায়ী সংস্কার সম্পন্ন হওয়ার পর নতুন ক্যাপ দেওয়ার নামে কার্যক্রম দীর্ঘায়িত করার বিষয়েও আপত্তি জানানো হয়। বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে, প্রাথমিক ক্যাপ অনুযায়ী সংস্কার সম্পন্ন করার পর সনদ দেওয়ার কথা বলা হয়। পরবর্তীতে নতুন করে ক্যাপ দিলে তার জন্য সময় দেওয়ার দাবিও তোলা হয়। এসব বিষয়ে অ্যাকর্ডের পক্ষ থেকে ইতিবাচক মতামত দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। তবে গতকালের বৈঠকে অ্যাকর্ডের কার্যক্রমের মেয়াদ বৃদ্ধি ইস্যুতে কোন আলোচনা হয়নি বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সময়সীমা শেষ হওয়ার পর অ্যাকর্ডের থাকার প্রয়োজন নেই বলেই আমরা মনে করি। তবে নতুন করে থাকতে হলে সব পক্ষের সমন্বয়ে তদারক কমিটি গঠন করা হবে। ওই কমিটির মতামতের ভিত্তিতে তাদের কার্যক্রম চলমান থাকবে। এ জন্য নতুন করে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

এদিকে বাংলাদেশে অ্যাকর্ডের কার্যক্রমের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে নতুন করে বেশকিছু ব্র্যান্ড একমত হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে ট্রেড ইউনিয়ন ইস্যুতে কাজ করা এবং অ্যাকর্ডের কার্যক্রম ইউরোপের দেশ নেদারল্যান্ডের শ্রম আইন অনুযায়ী চলার বিষয়ে সরকারের আপত্তির বিষয়টিও অ্যাকর্ড আমলে নিচ্ছে বলে জানা গেছে। এবিষয়ে মালিকপক্ষের তীব্র আপত্তি রয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, এ ইস্যুটি পূনর্বিবেচনা করছে অ্যাকর্ড। এসব ক্ষেত্রে নমনীয় হলে এবং তাদের বর্তমান কার্যক্রমের যে সব বিষয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে মতবিরোধ রয়েছে, সেক্ষেত্রে অবসানের পরিবর্তন করলে একটি ভালো সমাধান আসতে পারে।

২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের প্রায় ১২শ’ শ্রমিকের মৃত্যুর পর বাংলাদেশের পোশাক কারখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরীক্ষার উদ্যোগ নিতে অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স গঠিত হয়। এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে প্রায় তিনশ’ ব্র্যান্ড। এসব ব্র্যান্ডের কাছে পোশাক রপ্তানিকারক প্রায় ২২শ’ কারখানা ভবনের কাঠামো, অগ্নি ও বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরীক্ষা করে সংস্কার কার্যক্রম দেখভাল করছে উভয় জোট। আগামী বছরের মাঝামাঝি তাদের এসব কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার কথা। কিন্তু এ কার্যক্রম আরো তিন বছর চালিয়ে নিতে একতরফা সিদ্ধান্ত নেয় অ্যাকর্ড।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here