যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গত আট মাসে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের আয় কমলেও প্রতিযোগী দেশগুলোর বেড়েছে। এ সময় দেশের রপ্তানি আয় কমেছে প্রায় ৬ শতাংশ।
খাতসংশ্লিষ্টদের মতে, পণ্য জাহাজীকরণ সময় (লিড টাইম) বেড়ে যাওয়া ও অবকাঠামো দুর্বলতায় বাজারটিতে এমন নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
তবে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিসংখানে দেখা যায়, গত আট মাসে আয় কমলেও চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে দেশের তৈরি পোশাকের রপ্তানি আয় কিছুটা বেড়েছে। এ সময় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩.৪২ শতাংশ।
ইপিবি এবং বিজিএমইএর পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৭ সালের বার্ষিক ক্যালেন্ডার অনুসারে গত জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে দেশের পোশাক খাতের রপ্তানি হয়েছে ৩৫০ কোটি ৬৭ লাখ ডলার। ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত এ আয় ছিল ৩৭১ কোটি ৬৫ লাখ ডলার। অর্থাৎ এ সময় মোট রপ্তানি আয় কমেছে ৫.৬৪ শতাংশ।
অন্যদিকে এ সময় ভিয়েতনামের রপ্তানি আয় বেড়েছে ৫.৬৪ শতাংশ, ভারতের বেড়েছে প্রায় ১ শতাংশ। তবে বাংলাদেশের পাশাপাশি বিশ্বের সবচেয়ে বড় পোশাক রপ্তানিকারক দেশ চীনেরও রপ্তানি আয় কমেছে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে। এ আট মাসে চীনের রপ্তানি আয় কমেছে ৪.৬৬ শতাংশ এবং কম্বোডিয়ার কমেছে ২.৯৪ শতাংশ।
এদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে দেশের তৈরি পোশাকের রপ্তানি আয় কিছুটা বেড়েছে। এ সময় দেশটিতে রপ্তানি আয় হয়েছে ১৩০ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ আয় ছিল ১২৬ কোটি ৩২ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরের এ সময় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩.৪২ শতাংশ।
ইপিবি ও বিজিএমইএর পরিসংখ্যানে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে ওভেন পোশাক (প্যান্ট ও শার্ট) রপ্তানিতে আয় হয়েছে ৯৩ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। এ আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১.৮৭ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের একই সময়ে ওভেন পোশাক খাত থেকে আয় হয়েছিল ৯২ কোটি ১৬ লাখ ডলার।
নিট পোশাকে (গেঞ্জি) রপ্তানি করে দেশটি থেকে আয় হয়েছে ৯৩ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ পণ্য থেকে আয় হয়েছিল ৯২ কোটি ১৬ লাখ ডলার। এ আয় গত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের চেয়ে ৭.৫৯ শতাংশ বেশি।
জানতে চাইলে বিজিএমইএ সহসভাপতি মোহাম্মদ নাছির কালের কণ্ঠকে জানান, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ার ফলে তারা আরো ভ্যালু অ্যাডেড (উচ্চ মূল্যের) পোশাক কিনছে। ফলে তাদের বেসিক পোশাকের চাহিদা অনেক কমেছে। এ ছাড়া বিশ্ববাজারের পোশাকের রপ্তানিকারক দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের অবকাঠামো বেশ দুর্বল। এতে লিড টাইম বেড়ে যাওয়ায় দেশের পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারাচ্ছে। এ ছাড়া গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকট, চট্টগ্রাম বন্দর ও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পণ্য পরিবহন এবং খালাসে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয় রপ্তানিকারকদের।