৮ কোটি ডলারের সমপরিমাণ প্রায় সাড়ে ছয়শ‘ কোটি টাকার প্রতারণার শিকার হয়েছেন অন্তত ২৫টি পোশাক কারখানার মালিক। যুক্তরাজ্যের ঠিকানা ব্যবহার করা ‘ওয়াই অ্যান্ড এক্স‘ নামে একটি ভুয়া ক্রেতা প্রতিষ্ঠান জালিয়াতির মাধ্যমে এ প্রতারণা করে। বাংলাদেশি মনজুর বিল্লাহ ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক। ঢাকার পাঁচটি বায়িং এজেন্ট স্থানীয় হিসেবে এ জালিয়াতিতে সহযোগিতা করেছে। এ ব্যাপারে ঢাকায় পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে। জাহাজে তোলা ২৮ কনটেইনার বোঝাই পোশাক আবার ফেরত আনার চেষ্টা করছে বিজিএমইএ।
প্রতারণার শিকার একাধিক কারখানা মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক মাস আগে তুলনামূলক বেশি দামে অফার করে অন্তত ২০টি কারখানায় পৃথক রফতানি আদেশ দেয় ওয়াই অ্যান্ড এক্স। তবে শর্ত ছিল, চীনের নির্দিষ্ট কিছু কারখানা থেকেই কিনতে হবে কাপড়সহ সব কাঁচামাল। সব কাঁচামালেরই দর তুলনায় বেশি ধরা হয়েছে। তারপরও পোশাকের দর ভালো অফার করায় রাজি হয়ে যান উদ্যোক্তারা। এলসিসহ সব প্রক্রিয়া শেষে ২৮ কনটেইনার পোশাক যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর পর সেগুলো গ্রহণ করার মতো আর কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে ভুক্তভোগী উদ্যোক্তারা বলেন, এক পর্যায়ে খবর নিয়ে জানতে পারেন গোটা বিষয়টি একটা অভিনব জালিয়াতি ছাড়া আর কিছু নয়। সর্বস্ব হারিয়ে এখন তাদের পথে বসার দশা। বাধ্য হয়ে তারা বিজিএমইএর কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন। এ ব্যাপারে বাড্ডা, গুলশান ও উত্তরা থানায় বায়িং হাউসগুলোর বিরুদ্ধে গত বৃহস্পতিবার মামলা করেছেন তারা। ওই রাতেই মনজুর বিল্লাহর এক সহযোগী হুমায়ুন কবীরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সমকালের সঙ্গে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন বিজিএমইএ সহসভাপতি মোহাম্মদ নাছির। তিনি জানান, বাংলাদেশের পোশাক খাতের ইতিহাসে এরকম জালিয়াতির ঘটনা এর আগে হয়নি। ‘ওয়াই অ্যান্ড এক্স‘ এর জন্য যুক্তরাজ্যে পৌঁছানো ২৮ কনটেইনার পোশাক যত শিগগির সম্ভব ফেরত আনার চেষ্টা করছেন তারা। নাহলে ওইসব চালানের পোশাক স্থানীয়ভাবে নিলাম হয়ে যাবে। তখন সর্বস্ব খোয়া যাবে উদ্যোক্তাদের। প্রতিষ্ঠানের জন্য উৎপাদিত পোশাকের কয়েকটা চালান ক্রেতার দেওয়া ঠিকানার উদ্দেশ্যে এখন জাহাজে আছে। কিছু পোশাক উৎপাদন শেষে এখন কারখানায় আছে। জালিয়াত বায়িং হাউসগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে তিনটি থানায় পৃথক মামলা হয়েছে। তিনি জানান, প্রতারণার শিকার কারখানার সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।