Home Bangla Recent শিল্পনগরীতে প্লট হারাচ্ছেন ট্যানারি মালিকরা

শিল্পনগরীতে প্লট হারাচ্ছেন ট্যানারি মালিকরা

8 workers injured in roof collapse at savar

সাভারে চামড়া শিল্পনগরীর অনেক প্লটে এখনও কারখানা স্থাপনের কাজ শুরু হয়নি। কিছু ট্যানারি নির্মাণ কাজ শুরু করলেও উৎপাদনে যাওয়ার মতো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই। এ কারণে দুটি প্লটের বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে এবং সাতটি ট্যানারির প্লট কেন বাতিল করা হবে না- সে জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)।

শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি চামড়া শিল্পনগরী প্রকল্পের ভূমি বরাদ্দ কমিটির এক সভায় নবীপুর ট্যানারির প্লট বরাদ্দ বাতিল করা হয়। এ ট্যানারি কোনো নির্মাণ কাজ শুরু করেনি। ৩০ হাজার বর্গফুটের এ প্লট ব্যাক ওয়ার্ড লিংকেজ বা বাই প্রোডাক্ট ইন্ডাস্ট্রির জন্য ব্যবহার করার কথা ছিল। একই কারণে কমলা ট্যানারির প্লট বরাদ্দ বাতিল করা হয়। ১০ হাজার বর্গফুটের এ সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের জন্য ব্যবহার করা হবে। তবে ওই ট্যানারি মালিক নির্মাণ শুরুর অনুমতি চেয়ে আবেদন করায় তাকে নতুন করে সমপরিমাণ একটি প্লট দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সূত্র জানায়, সম্প্রতি চামড়া শিল্পনগরীতে বাতিলযোগ্য ও খালি প্লট সরেজমিন পরিদর্শন করে একটি বিশেষ কমিটি। এ কমিটির দেওয়া প্রতিবেদনে ৭ ট্যানারির কাজের গতি খুবই ধীর হওয়ায় প্লট বরাদ্দ কমিটির নীতিমালা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। এগুলো হলো হেলাল ট্যানারি, সদর ট্যানারি, মিল্লাত ট্যানারি, চায়নিজ লেদার, সোনালী ট্যানারি, জিন্দাবাদ ট্যানারি ও হোসেন ব্রাদার্স। এগুলোর মধ্যে জিন্দাবাদ ছাড়া সব ট্যানারির কাজে অগ্রগতি নিয়ে অসন্তুষ্টি জানানো হয়েছে।

কমিটি একই সঙ্গে তিনটি খালি প্লট নতুন করে বরাদ্দ দেওয়ার সুপারিশ করেছে। প্রতিবেদনের আলোকে ওই ছয়টি ট্যানারি ও ইব্রাহিম লেদার নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান দৃশ্যমান কাজ না করায় কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে শিল্প মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে নতুন করে ৪টি প্লট বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এগুলো পেয়েছে আরব ট্যানারি, রাইসা লেদার, অঙ্গন লেদার কমপ্লেক্স ও মধু হাজী ট্যানারি। এসব ট্যানারিকে ১০ হাজার ও ১১ হাজার ৫০০ বর্গফুটের প্লট দেওয়া হবে। তাছাড়া শিল্পনগরী প্রকল্পের দ্বিতীয় ফেজ শুরু করতে ডিপিপি প্রণয়নের কাজ করতে বিসিককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন এ প্রসঙ্গে সমকালকে বলেন, কোনো ট্যানারি বরাদ্দ নীতিমালা বরখেলাপ করলে প্লট বাতিল হবে। তবে এ ক্ষেত্রে কোনো অবিচার হলে অ্যাসোসিয়েশন ট্যানারি মালিকদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে প্লট ফেরত চাইবে। যথাযথভাবে প্লট বরাদ্দ বাতিল হলে সে ক্ষেত্রে কিছু করার থাকবে না। তিনি বলেন, অনেক ট্যানারি মালিককে বিসিক বিভিন্ন সময় নোটিশ দিয়ে সতর্ক করেছে। এর পরেও কাজ শুরু না করলে বাতিল হতে পারে। তবে যেসব ট্যানারি নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সেগুলোকে সুযোগ দেওয়া উচিত।

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, হঠাৎ করে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ট্যানারি বন্ধ করে দেওয়ায় অনেক ট্যানারি মালিকের ব্যবসা বন্ধ হয়েছে। এতে আর্থিক সংকটে পড়েছেন অনেক ট্যানারি মালিক। ফলে কাজ শুরু করেও শেষ করতে পারেননি। তাছাড়া ট্যানারির প্লট বরাদ্দ দিলেও এখন পর্যন্ত জমির দলিল দেওয়া হয়নি। এ কারণে ব্যাংক ঋণ নিয়ে সাভারে ট্যানারি চালু করতে পারছেন না কেউ কেউ। জমির দলিল দেওয়া হলে সব ট্যানারি নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ট্যানারি মালিকদের দুরবস্থা থেকে উত্তরণে আরও

সময় দেওয়া দরকার। শিল্পনগরীতে ২০০৬ ও ২০০৭ সালে ২০৫ প্লটে ১৫৫ শিল্পকারখানা নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত ১৫১ প্লটে মালপত্র মজুদসহ নির্মাণ কাজ চলছে। এর মধ্যে ৭৮টি চামড়া উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here