তৈরি পোশাকের রপ্তানি আবার বেড়েছে। গত নভেম্বরে ২৫২ কোটি মার্কিন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের নভেম্বরে রপ্তানি হওয়া ২৩১ কোটি ডলারের চেয়ে ৯ শতাংশ বেশি। অক্টোবরে পোশাক রপ্তানিতে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ছিল। তার আগে ১১ শতাংশ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি ছিল।
চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) ১ হাজার ১৯৬ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই আয় গত অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি হওয়া ১ হাজার ১১৩ কোটি ডলারের চেয়ে ৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে নিট পোশাকে ১০ দশমিক ৮৬ শতাংশ এবং ওভেন পোশাকে ৩ দশমিক ৯৯ শতাংশ রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। চলতি অর্থবছর ৩ হাজার ১৬ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সরকার।
এদিকে মোট রপ্তানি আয়ের ৮২ শতাংশ পোশাক খাত থেকে এসেছে। এই খাতে সাড়ে ৭ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি হলেও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রপ্তানি খাত চামড়ায় ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সে জন্য সামগ্রিক পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমে ৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ হয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাস শেষে সামগ্রিক পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ২৩ শতাংশ।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) গতকাল বৃহস্পতিবার রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ১ হাজার ৪৫৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে শূন্য দশমিক ৭২ শতাংশ বেশি। কেবল নভেম্বরে ৩০৫ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই আয় গত বছরের নভেম্বরে রপ্তানি হওয়া ২৮৮ কোটি ডলারের চেয়ে ৬ দশমিক ২২ শতাংশ বেশি। গত অক্টোবরে ২৮৪, সেপ্টেম্বরে ২০৩, আগস্টে ৩৬৪ ও জুলাইয়ে ৩২০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। চলতি অর্থবছর সার্বিক রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৭৫০ কোটি ডলার।
জানতে চাইলে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘পোশাক তৈরির মৌসুম শুরু হয়েছে। সে জন্য রপ্তানি বাড়ছে। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে পোশাক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ৯ শতাংশ না হয়ে ১২-১৫ শতাংশ হওয়া উচিত ছিল।’
পোশাক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় না হওয়ার কারণ হিসেবে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘ক্রেতাদের কাছ থেকে পোশাকের কম দাম পাচ্ছি। অন্যদিকে চট্টগ্রাম বন্দরে জটিলতার কারণে এখনো আমরা কাঁচামাল স্বল্প সময়ে পাচ্ছি না। আমাদের মালামাল নষ্ট হচ্ছে।’ তিনি কর্তৃপক্ষকে বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে নজর দেওয়ার অনুরোধ করেন।
পোশাকের পর রপ্তানি আয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে চামড়া খাত। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ৫১ কোটি ৮১ লাখ ডলারের চামড়া ও চামড়া পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে আছে ৮ কোটি ডলারের চামড়া, ১৮ কোটি ডলারের চামড়ার পণ্য ও ২৫ কোটি ডলারের চামড়ার জুতা। আলোচ্য সময়ে চামড়া ও চামড়ার পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক, ২ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
পাট ও পাটপণ্য রপ্তানি করে তৃতীয় সর্বোচ্চ ৪৫ কোটি ডলারের আয় হয়েছে। এর মধ্যে ৬ কোটি ৭২ লাখ ডলারের কাঁচাপাট, ২৮ কোটি ডলারের পাটসুতা এবং ৫ কোটি ৫১ লাখ ডলারের পাটের ব্যাগ রপ্তানি হয়। পাট ও পাটপণ্য রপ্তানিতে ১৬ দশমিক ৫১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। চলতি অর্থবছর পাট ও পাটপণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ১০৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার।