ঢাকা আন্ত্মর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৩তম আসরের পর্দা নামতে আর মাত্র সাতদিন বাকি। শেষ সময় এসে প্রতিদিনই মেলা প্রাঙ্গণে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
দর্শনার্থীদের পদচারণায় মেলা প্রাঙ্গণে যেন উৎসবের আমেজ বইছে। আর এই সুযোগে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করতে মেলার স্টল, প্যাভিলিয়নগুলোতে বিভিন্ন ধরনের ছাড় আর অফার দিচ্ছেন বিক্রেতারা।
মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, ছাড় আর অফারের মিছিলে সামিল হয়ে ১০-৫০ শতাংশ পর্যন্ত্ম মূল্য ছাড় দিচ্ছেন গার্মেন্ট পণ্যের বিক্রেতারা। এতে দর্শনার্থী বাড়লেও বিক্রি বাড়ছে না এসব স্টলে।
মেলার অন্যান্য পণ্যের স্টল আর প্যাভিলিয়নে বিক্রি ভালো হওয়ায় বিক্রেতারা যেমন আশায় বুক বেঁধেছেন, ঠিক তেমনি গার্মেন্ট পণ্যের দোকান মালিকরা হতাশা প্রকাশ করলেন।
মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, ইলেকট্রনিকস, ক্রোকারিজ আর খাবারের দোকানে ক্রেতাদের আনাগোনা যেমন বেশি, বিক্রিও তেমন আশানুরূপ। অপরদিকে বেস্নজার, শার্ট, প্যান্ট, টি-শার্ট, পাঞ্জাবিসহ বিভিন্ন গার্মেন্ট পণ্যের দোকানে ১০-৫০ শতাংশ ছাড় দেয়া হয়েছে।
কোনো কোনো বেস্নজারের দোকানে ‘আখেরি অফার নামে’ ৫০ শতাংশ ছাড় দেয়া হয়েছে। এতে দর্শনার্থী বাড়লেও ক্রেতা পাচ্ছেন না বলে জানান এসব দোকান মালিকরা। এ বছর বেচা-বিক্রির যে অবস্থা, এতে বড় ধরনের ব্যবসায়িক ক্ষতিতে পড়তে হবে বলেও জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
মেলার ৬১ নম্বর স্টল ‘মেনস আর্ট’র প্রোপ্রাইটর বাদল বলেন, আমরা গত তিন বছর ধরে মেলায় স্টল নিচ্ছি। এত খারাপ অবস্থা এর আগে কোনো বছর দেখিনি। যে পণ্য আমাদের শো-রম্নমে মানুষ ১৫০০ টাকা দাম বলে এখানে ৭০০ টাকায়ও সেই পণ্য নিচ্ছে না। আমাদের শো-রম্নমে এর চেয়েও ব্যবসা অনেক ভালো হয়।
বাদল বলেন, এ বছর আমরা সরকারিভাবে স্টল পাইনি, পরে স্টল নিয়েছি চার লাখ ৬০ হাজার টাকায়।
এদিকে মেলায় লাভের আশায় প্রথমবার স্টল দিয়েছেন পলওয়েল মার্কেটের ব্যবসায়ী আহম্মেদ বাবু। মেলার ৬৮ নম্বর ‘নেক্সট স্টেপ’ স্টলটি তাদের। সেখানে বিভিন্ন ধরনের জ্যাকেট, টি-শার্ট, প্যান্ট, বিদেশি জুতা, ব্যাগ বিক্রি করা হচ্ছে। পণ্যের ধরনের ওপর দেয়া হয়েছে ১০-৪০ শতাংশ ছাড়। তবুও বিক্রির যা অবস্থা, এতে লস হবে বলে জানান তিনি।
আহম্মেদ বাবু বলেন, ‘মেলায় আমরা লাভের আশায় প্রথমবার দোকান নিলাম, আর প্রথমবারই লস। স্টল নিয়েছি তিন লাখ ২০ হাজার টাকায়। প্রতিদিন স্টাফদের খাওয়া, বেতন সব মিলিয়ে প্রচুর খরচ। কিন্তু বিক্রি নেই। ক্রেতারা শুধু ছাড় চায়, ছাড় দিতে দিতে আমাদের চালানইতো শেষ হওয়ার পথে।’