তৈরি পোশাক খাতে কর্মরত শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন ১৮ হাজার টাকা করার আহ্বান জানিয়েছে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট। শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন, উৎপাদন বৃদ্ধি ও গুণগতমান উন্নয়ন, অর্থনীতির বিকাশ তথা সর্বোপরি দেশকে উন্নয়নশীল দেশের মানদণ্ড বিবেচনায় এ মজুরি অপরিহার্য বলেও দাবি তাদের। ‘গার্মেন্ট শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি কত হওয়া উচিত’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় এ আহ্বান জানানো হয়। মঙ্গলবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এ সভার আয়োজন করা হয়। গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের মতবিনিময় সভায় একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদের কেন্দ্রীয় সদস্য বজলুর রশিদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি আহসান হাবিব বুলবুল বলেন, ১২ হাজার ডলার রফতানি করে তৈরি পোশাক শিল্পের যাত্রা শুরু হয়েছিল। এখন এটি দেশের প্রধান রফতানি আয়ের খাতে পরিণত হয়েছে। বিজিএমইএ’র তথ্য মতে, দেশে ৪০ লাখ গার্মেন্ট শ্রমিক কর্মরত আছেন। রফতানি আয়ের ৮২ শতাংশই আসছে এ পোশাক শিল্প থেকে। শ্রমিকদের মজুরি বাড়ছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে গার্মেন্ট ব্যবসা বাড়ছে, মালিকের মুনাফা বেড়েছে, রফতানি বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু শ্রমিকদের মজুরি সে হারে বাড়েনি। ফলে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জীবনযাপনের ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে যুদ্ধ করে দিন পার করছেন তারা। অর্থনৈতিক উন্নতি সত্ত্বেও শ্রমিকদের জীবনমান উন্নত হয়নি জানিয়ে অন্য বক্তরা বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের স্তর থেকে উন্নীত হয়েছে বলে সরকারি মহল থেকে ব্যাপক উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা হচ্ছে। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নত হলেও শ্রমিকরা মানসম্পন্ন জীবনযাপন করার মতো মজুরি পাচ্ছেন না। নিয়ম অনুসারে, শ্রমিকেদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়লে দেশের সামগ্রিক ক্রয়ক্ষমতা বাড়ে। বক্তারা বলেন, মানসম্মত মজুরি যেমন শ্রমিকদের জীবনমান উন্নত করবে, তেমনি দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে। দেশকে যদি উন্নত দেশের কাতারে দাঁড় করাতে হয়, তাহলে শ্রমজীবী মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে হবে। শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি ছাড়া তাদের আয় ও ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে না। বর্তমানে বাজার দর বিবেচনা করে ১৮ হাজার টাকা মজুরি নির্ধারণ দেশের শ্রমিক এবং অর্থনীতির বিকাশের জন্যই প্রয়োজন।