মোট চাহিদার প্রায় ৪৬ শতাংশ তুলা ভারত থেকে আমদানি করা হয়। এ ধরনের একক উৎস থেকে আমদানির নির্ভরতা কমানো উচিত। এ জন্য সাপ্লাই চেইন শক্তিশালী করতে হবে। আফ্রিকা, কমনওয়েলথভুক্ত দেশ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য থেকে আমদানি বাড়াতে উদ্যোগী হতে হবে।
শনিবার গ্লোবাল কটন সামিটের সমাপনী দিনে বিভিন্ন সেশনে আলোচনায় অংশ নিয়ে বস্ত্র খাতের উদ্যোক্তারা এসব কথা বলেছেন। যৌথভাবে সামিট আয়োজন করেছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) ও বাংলাদেশ কটন অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএ)।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, দেশে ব্যবহার হওয়া তুলার ৯৭ শতাংশই আমদানিনির্ভর। এর মধ্যে শুধু ভারত থেকে ৪৬ শতাংশ তুলা আমদানি হয়। আর মাত্র তিন শতাংশ তুলা দেশে উৎপাদন হয়। প্রায়ই আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার দর ওঠানামা করে। এতে পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়ে। আমদানিকারকদের বড় ক্ষতির শিকার হতে হয়। তাই তুলা আমদানির ক্ষেত্রে একক কোনো উৎসের ওপর নির্ভর না হয়ে সাপ্লাই চেইন শক্তিশালী করার ওপর জোর দিতে হবে। এর অংশ হিসেবে আফ্রিকা, কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোতে উন্নতমানের তুলা আমদানির বাধাগুলো দূর করতে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে।
সামিটের শেষ দিন শনিবার বাংলাদেশের বস্ত্র খাতের ব্যবসায়ীরা সামিটে অংশ নেয়া বিদেশি তুলা উৎপাদক, মার্চেন্টদের সঙ্গে আলোচনা অংশ নেন। বিভিন্ন সেশনে তুলার মান, ওজনের ত্র“টিবিচ্যুতির সুরাহা পদ্ধতি, অর্ডার দেয়ার পদ্ধতি, অর্থ স্থানান্তর প্রক্রিয়া, জাহাজীকরণের বিষয়ে বিস্তর আলোচনা হয়।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ কটন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহ্দী আলী বলেন, এবারের মেলায় দেশের তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের ভালো সাড়া পাওয়া গেছে। এ সামিটের উদ্দেশ্য হচ্ছে, একক উৎসের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আনা। সব ব্যবসায়ীই চাচ্ছেন, তুলার একটি উৎসের ওপর নির্ভর না করে বিকল্প উৎসের খোঁজ রাখতে। এ ক্ষেত্রে কটন সামিট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ব্রাজিল, চাদ, আফ্রিকার মতো দেশগুলোর ব্যবসায়ীরাও বাংলাদেশিদের কাছে তুলা বিক্রি করতে মুখিয়ে আছে। এ সামিট ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগ আরও সুদৃঢ় করবে।
রাজধানী হোটের রেডিসনে তৃতীয়বারের মতো আয়োজিত সামিটে ভারত, সুদান, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, সুইজারল্যান্ড, মালি, বুরকিনা ফাঁসো, চাদ, তুরস্ক, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের দুই শতাধিক ব্যবসায়ী প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন।
সামিটের আয়োজক সংগঠনগুলো জানিয়েছে, বাংলাদেশের স্পিনিং ক্ষমতা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। ফলে আগামীতে তুলার প্রয়োজন হবে। গ্লোবাল কটন সামিট এ লক্ষ্য অর্জনে ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে।