আগামী মে মাসের পর দেশে গার্মেন্টস কারখানা পরিদর্শনে ইউরোপের ক্রেতাদের সমন্বয়ে গঠিত জোট অ্যাকর্ড চলে যাবে বলে ইতিমধ্যে সরকারি তরফে ঘোষণা এসেছে। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ জানিয়েছেন, পরিদর্শন কার্যক্রম দেখভালের দায়িত্ব গ্রহণে সরকারের প্রস্তুতির ঘাটতি থাকলে মেয়াদ শেষের (আগামী মে মাস) পর সর্বোচ্চ ছয় মাস অ্যাকর্ড কার্যক্রম চালাতে পারবে। তবে অ্যাকর্ড বলছে, বাংলাদেশে থাকার জন্য ইতোমধ্যে অন্তত ১০৭টি ব্র্যান্ড সম্মতি দিয়েছে। অ্যাকর্ডভুক্ত প্রায় ১৬শ’ কারখানার ১২শ’ কারখানাই এই ব্র্যান্ডগুলোর আওতাভুক্ত। তারা আগামী জুন থেকে পরবর্তী এক বছরের জন্য প্রযোজ্য ফি পরিশোধ করেছে। এর ফলে দৃশ্যত তাদের বাংলাদেশে কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়া নয়, বরং কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টিই পরিস্কার হচ্ছে। অ্যাকর্ডের ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে একটি বক্তব্য দেওয়া হয়েছে।
ইস্যুটি নিয়ে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে পোশাক শিল্প মালিকদের মধ্যে। তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র একজন নেতা ইত্তেফাককে বলেন, অ্যকর্ড তাদের শর্তের বাইরে গিয়ে কাজ করছে। নতুন নতুন শর্ত যুক্ত করছে। কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন ইস্যুতেও নাক গলাচ্ছে, ক্ষেত্রবিশেষে বাধ্য করা হচ্ছে। কারখানার শৃঙ্খলার স্বার্থে মালিক চাইলে পাওনা পরিশোধ করে কোন শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করতে পারে। এটি মালিকের আইনগত অধিকার। অথচ অ্যাকর্ড তাতেও বাধ সাধছে। ব্যবসা বাতিলের হুমকি দিচ্ছে। এ কারনে অ্যাকর্ড নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। কারখানা সংস্কারের নামে তারা এখন আমাদের জন্য গলার কাঁটা হয়ে গেছে।
অবশ্য একাধিক শ্রমিক নেতার সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, অ্যাকর্ড ইস্যুটি বাংলাদেশের জন্য বর্তমানে অত্যন্ত জটিল। তাদেরকে জোর করে বাংলাদেশ ছাড়তে বাধ্য করা হলে বড় বড় ব্র্যন্ডসহ অ্যাকর্ডভুক্ত ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে ব্যবসা হুমকিতে পড়তে পারে। আবার কার্যক্রম চালালে তারা স্থানীয় আইন ও নিয়মের বাইরে গিয়ে খবরদারি করতে পারে।
৮২ শতাংশ ত্রুটির সংস্কার সম্পন্ন
এদিকে অ্যাকর্ডের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, গত জানুয়ারি নাগাদ এ জোটভুক্ত কারখানাগুলোর চিহ্নিত হওয়া ত্রুটির ৮২ শতাংশ সংস্কারকাজ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ১২৭টি কারখানা শতভাগ ত্রুটির সংস্কার সম্পন্ন করেছে। আর ৯০ শতাংশের বেশি ত্রুটি সংস্কার করেছে প্রায় ৭শ’ কারখানা। অন্যদিকে নির্দিষ্ট ত্রুটি সংস্কারের ব্যর্থতা কিংবা অ্যাকর্ডকে সহযোগিতা না করার অভিযোগে এ পর্যন্ত ১৩৮টি কারখানার সঙ্গে ব্যবসা বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে অগ্নি, বৈদ্যুতিক ও ভবনের কাঠামোগত নিরাপত্তার বেশকিছু কার্যক্রম এখনো সম্পন্ন হয়নি।