প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন বিনিময়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের বর্তমান ও ভবিষ্যতের মধ্যে একটি সেতুবন্ধ তৈরি করতে চান উদ্যোক্তারা। সোমবার রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ফ্যাশনোলজি সামিট’ শীর্ষক ফ্যাশন ও প্রযুক্তিবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। এতে আমেরিকা, নেদারল্যান্ড, ফ্রান্স, জাপান এবং ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ১৭ জন ফ্যাশন ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ এই সামিটের ৪ সেশনে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া উদ্যোক্তা, ক্রেতা প্রতিনিধি, বাণিজ্যিক সংগঠনের প্রতিনিধি, উন্নয়ন অংশীদারসহ পোশাকশিল্পের নীতি নির্ধারক পর্যায়ের ৪৫০ জন এ সামিটে অংশগ্রহণ করেন।
আয়োজক বাংলাদেশ এ্যাপোরেল এক্সচেঞ্জ (বিএই) প্রধান মোস্তাফিজ উদ্দিন বলেন, এই সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ফ্যাশন ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করছেন। পোশাকশিল্পের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনগুলো নিয়ে আলোচনা করছেন উদ্যোক্তারা। তারা বলেছেন, ভবিষ্যতে প্রযুক্তিগত পরিবর্তনে পোশাক শিল্পের ক্ষেত্রে যে ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে। মোস্তাফিজ বলেন, চ্যালেঞ্জ বলতে মানুষের মনের মধ্যে ভুল কিছু ধারণা আছে। তা হলো প্রযুক্তি বিপ্লবের ফলে অনেকে চাকরিহারা হয়ে যাবে। এটা কোন বিষয় না;বরং প্রযুক্তিগত অগ্রগতি করতে হবে। তাহলে আমরা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারব। আমরা নিজেদেরকে আগামী দিনের যে চ্যালেঞ্জটা আসবে সেগুলোর সঙ্গে যদি খাপ খাওয়াতে না পারি, তাহলে পাশের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলো এগিয়ে যাবে। আর আমরা বাজার হারাব। এখানে চ্যালেঞ্জ বলতে সেই ধরনের কোন চ্যালেঞ্জ নেই। একটাই চ্যালেঞ্জ আছে আমাদের টেকনোলজিকে আনতে হবে এবং মানুষকে পরিচয় করাতে হবে। বাংলাদেশে এখনও যে সমস্ত প্রযুক্তিগত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়, সেগুলো যথেষ্ট পরিমাণে আধুনিকায়ন নয় বলে জানান মোস্তাফিজ। তিনি আরও বলেন, আমরা তো এখন পর্যন্ত পুরনো ধ্যান-ধারণা নিয়ে কাজ করছি। যার ফলে বাংলাদেশের পণ্যের দাম পড়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা চাচ্ছি উচ্চ বা গুণগত মানসম্পন্ন পর্যায়ে যেতে। সরকারও চাইছে আমাদের রফতানি ৩০ বিলিয়ন থেকে ৫০ বিলিয়নে যেতে।
পোশাকশিল্পের উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ব্যাপকহারে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় তার ফলে শ্রমিকরা চাকরি হারানোর একটা আশঙ্কা আছে। এ ব্যাপারে মোস্তাফিজ জানান, চাকরি হারানোর কোন আশঙ্কা নাই।
মানুষের বিকল্প কর্মসংস্থান সম্পর্কে মোস্তাফিজ বলেন, আমাদের দেশে যখন স্মার্ট ফোন আসে তখন আমাদের প্রত্যেকে ঘুম থেকে উঠে স্মার্ট ফোন দেখে না এই রকম লোকের সংখ্যা খুব কমই পাবেন। প্রযুক্তির বিপ্লবের ক্ষেত্রে সেখানে কোন পরিবর্তন হয়নি। বিকাশের ক্ষেত্রে সবকিছু অনলাইনের মাধ্যমে কেনাকাটা করছে। চাকরি হারিয়েছে তা না;বরং তারা চাকরি পেয়েছে। আমরা যদি প্রযুক্তির বিপ্লব ঘটাতে পারি তাহলে আমাদের আরও বেশি কর্মসং¯’ান বাড়বে। কেউ চাকরি হারাবে না। বাংলাদেশ এ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ-এর ব্যব¯’াপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, বাংলাদেশ এ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ-এর অন্যতম লক্ষ্য হলোÑ বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের উন্নয়নের পথকে সুগম ও ত্বরান্বিত করা।