ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ (ব্রেক্সিট নামে পরিচিত) কার্যকরের পর একটি অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা নিয়ে সম্মত হয়েছে উভয় পক্ষ। এতে অন্তত ব্রেক্সিট কার্যকর হওয়ামাত্রই যুক্তরাজ্য ও ইইউয়ের মধ্যকার সম্পর্ক হঠাৎ বদলে যাওয়া থেকে রক্ষা পেল। পাশাপাশি ইইউয়ের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ–পরবর্তী বাণিজ্য সম্পর্ক কী হবে, তা নির্ধারণে কিছুটা দম ফেলার সুযোগ মিলবে।
২০১৯ সালে ২৯ মার্চ ব্রেক্সিট কার্যকর হবে বলে দিনক্ষণ ঠিক করা আছে। ২৮ দেশের এই জোট ছাড়ার প্রাথমিক আলোচনায় দেনা-পাওয়া এবং পরস্পরের নাগরিকদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সমঝোতা হয়। সেই সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যাতে বিচ্ছেদের প্রভাব না পড়ে, সে জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন সম্পর্কের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে সম্মত হয় উভয় পক্ষ। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সম্পর্কের শর্তগুলো নিয়ে মতভিন্নতা ছিল।
সোমবার বৈঠক শেষে ইইউ পক্ষের প্রধান সমঝোতাকারী মিশেল বার্নিয়ে বলেন, ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২১ মাস বজায় থাকবে অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা। এ সময়ে যুক্তরাজ্যে পাড়ি দেওয়া ইইউ নাগরিকেরা আগের মতো সমান সুযোগ-সুবিধা পাবেন। এ ছাড়া যুক্তরাজ্য স্বাধীনভাবে ইইউ–বহির্ভূত দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদন করতে পারবে। কিন্তু এসব চুক্তি ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে কার্যকর করা যাবে না।
তবে আয়ারল্যান্ড সীমান্ত নিয়ে চূড়ান্ত কোনো সুরাহা হয়নি। এ নিয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকবে। নতুন কোনো সমাধান পাওয়ার আগ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের অংশ নর্দান আয়ারল্যান্ড ইইউ আইনের অধীনে থাকবে বলে সম্মতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য।
এত দিন যুক্তরাজ্য অন্তর্বর্তীকালে আসা ইইউ নাগরিকদের আগের মতো সমান সুযোগ দিতে আপত্তি জানায়। প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে নর্দান আয়ারল্যান্ডকে ইইউ আইনের অধীনে রাখার ঘোর বিরোধিতা করছিলেন।
কট্টর ব্রেক্সিটপন্থীরা যুক্তরাজ্যের তরফ থেকে বেশি ত্যাগ স্বীকার করা হয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করছে।
যুক্তরাজ্যের পক্ষের প্রধান সমঝোতাকারী ব্রেক্সিট–বিষয়ক মন্ত্রী মিশেল বার্নিয়ে এই সমঝোতাকে সফলতা হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, এর ফলে ইইউয়ের সঙ্গে ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে আলোচনার পথ সুগম হলো। যুক্তরাজ্য দ্রুততার সঙ্গে ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা শুরু করতে চায় বলে জানান ডেভিস।