ঢাকার বাড্ডার একটি বাণিজ্যিক ভবনে কার্যক্রম পরিচালনা করত তোবা গ্রুপের পোশাক কারখানা। স্থাপত্য ত্রুটি শনাক্ত হওয়ার পর ওই ভবন থেকে কারখানাটি সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তবে স্থাপত্য ত্রুটি সংশোধন না করেই ভবনটিতে অন্যান্য বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড সচল আছে।
শুধু বাড্ডার ওই ভবনটিই নয়, ঢাকা ও চট্টগ্রামে অর্ধশতাধিক ভবন আছে, যেগুলোর স্থাপত্য ত্রুটি শনাক্ত হয়েছে। ভবনগুলোয় থাকা অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু ভবনের ত্রুটি সংশোধন না করেই পোশাক কারখানার স্থলে অন্য প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক কার্যক্রম চলছে। ত্রুটিপূর্ণ এসব ভবনে কার্যক্রম চলতে দেয়া নিরাপদ নয় বলে মনে করছে শ্রম মন্ত্রণালয়। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে তাই রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (চউক) চিঠি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্রম মন্ত্রণালয়।
পোশাক কারখানা পরিদর্শনকালে ভবনের এসব ত্রুটি নজরে আসে সরকারি ও বেসরকারি কর্তৃপক্ষের। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক উদ্যোগে এখন পর্যন্ত দেশের মোট ৩ হাজার ৭৮০টি কারখানা পরিদর্শন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৬৩টি ভবনে স্থাপত্য ত্রুটি শনাক্ত হয়। ৩৯টি ভবনে ঝুঁকির মাত্রা বেশি হওয়ায় তাত্ক্ষণিকভাবে সেগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। বাকি ১২৪টি কারখানা ও ভবন কর্তৃপক্ষকে ত্রুটি সংশোধন করে ভবনের বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড সচল রাখার পরামর্শ দেয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৬৩টি কারখানার মধ্যে অধিকাংশেরই ত্রুটি সংশোধন না করে অন্যান্য বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর মধ্যে অনেক ভবন মালিক পোশাক কারখানার বদলে অন্য খাতের কারখানার উৎপাদন কাজে ব্যবহারের জন্য ভবন ভাড়া দিচ্ছেন। অনেকে আবার ত্রুটির বিষয়টি গোপন রেখে অন্য পোশাক কারখানা মালিককে ফ্লোর ভাড়া দিচ্ছেন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র মতে, সম্প্রতি সরকারের জাতীয় ত্রিপক্ষীয় কমিটির সভায় ত্রুটি নিয়ে সচল থাকা ভবনগুলোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সে অনুযায়ী রাজউক ও চউককে ভবনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার অনুরোধ করা হবে। এ সংক্রান্ত একটি চিঠির খসড়া তৈরি করা হয়েছে। খুব শিগগির এটি রাজউক ও চউককে পাঠানো হবে।
জানতে চাইলে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের (ডিআইএফই) মহাপরিদর্শক সামছুজ্জামান ভুইয়া বণিক বার্তাকে বলেন, ভবনে ত্রুটি থাকলে সে বিষয়ে আমরা নোটিস দিয়েছি।
এখন বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হলে তা বন্ধের বিষয়ে আমরা ছাড়াও অন্যান্য কর্তৃপক্ষ আছে। যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্যই আমরা সেসব কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা চাইব।
উল্লেখ্য, ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের সব জেলায় এসব কারখানার বিভিন্ন ত্রুটি এরই মধ্যে শনাক্ত হয়েছে। প্রাথমিক পরিদর্শনের পর নিরাপত্তা ঝুঁকির মাত্রাভেদে বিভিন্ন শ্রেণীভুক্ত করা হয়। গত চার বছরে শুধু ঢাকায় বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ৫১৩টি কারখানা বন্ধ হয়েছে। কিন্তু বন্ধ হচ্ছে না ভবনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম।