চলতি অর্থবছরের আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) রপ্তানি আয় বেড়েছে। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ। এ সময়ে মোট রপ্তানি হয়েছে ২ হাজার ৪৩৯ কোটি ৭০ লাখ ডলারের পণ্য। আর ফেব্রুয়ারিভিত্তিক হিসাবে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রপ্তানি বেড়েছে ১৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ তথ্যে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩০৩ কোটি ডলার। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৩০৭ কোটি ২১ লাখ ডলারের পণ্য। আর আগের অর্থবছরের ফেব্রুয়ারিতে রপ্তানি হয়েছিল ২৭০ কোটি ৫৯ লাখ ডলারের পণ্য।
ফেব্রুয়ারি মাসে খাতওয়ারি রপ্তানির হিসাবে দেখা গেছে, এ সময়ে প্রাথমিক পণ্যের মধ্যে হিমায়িত খাদ্য ও মাছ রপ্তানি ইতিবাচক অবস্থায় রয়েছে। জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারিতে উল্লেখিত পণ্যের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৪ কোটি ৮১ লাখ ডলার। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৩৮ কোটি ৩০ লাখ ডলারের পণ্য, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১০ দশমিক ০২ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরে হিমায়িত খাদ্য ও মাছ রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার। আগের অর্থবছর রপ্তানি হয়েছিল ৫২ কোটি ৬৪ লাখ ডলার। হিমায়িত খাদ্য ও মাছ রপ্তানির মধ্যে থাকা জীবিত মাছ রপ্তানি জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কমেছে ২৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ। এ সময়ে জীবিত মাছ রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫২ লাখ ডলার। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৩৭ লাখ ডলারের মাছ। হিমায়িত খাদ্য রপ্তানি বেড়েছে ৪১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হিমায়িত খাদ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ কোটি ৯২ লাখ ডলার। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৪ কোটি ১৪ লাখ ডলার। এ খাতের মধ্যে থাকা চিংড়ি রপ্তানি বাড়লেও কমেছে কাঁকড়া ও অন্যান্য দ্রব্য রপ্তানি।
কৃষি পণ্যের রপ্তানির পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে এ খাতের রপ্তানি বেড়েছে ৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ। উল্লেখিত সময়ে কৃষি পণ্যের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৭ কোটি ৪৮ লাখ ডলার। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৪০ কোটি ৬২ লাখ ডলারের পণ্য। চলতি অর্থবছরে এ খাতের মোট রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
এ খাতের মধ্যে থাকা চা রপ্তানি জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি সময়ে কমেছে ৩৬ দশমিক ৩১ শতাংশ। সবজি রপ্তানি কমেছে ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ। তামাক রপ্তানি বেড়েছে ৬২ দশমিক ৭২ শতাংশ। প্রক্রিয়াজাত ফুল রপ্তানি কমেছে ৬০ শতাংশ।
ফল রপ্তানি বেড়েছে ৬৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ। জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ফল রপ্তানি হয়েছে ২১ লাখ ডলারের। যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩ লাখ ডলার।
চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কমেছে। জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮৯ কোটি ৭৯ লাখ ডলার। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৭৮ কোটি ৪৯ লাখ ডলারের। চলতি অর্থবছরে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৩৮ কোটি ডলারের পণ্য। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের মধ্যে শুধু চামড়া রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ কোটি ৬১ লাখ ডলার। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ১২ কোটি ৫৫ লাখ ডলারের পণ্য, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৯ দশমিক ৬০ শতাংশ কম। চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৫ কোটি ১৩ লাখ ডলার। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ২৬ কোটি ৫৪ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ কম।
পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেড়েছে। জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে উল্লেখিত পণ্যের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৮ কোটি ৬৫ লাখ ডলার। সেখানে রপ্তানি হয়েছে ৭৪ কোটি ১১ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ বেশি। কঁাঁচা পাট লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রপ্তানি কমেছে ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ। উল্লেখিত সময়ে কাঁচা পাট রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১১ কোটি ৩৮ লাখ ডলার। রফতানি হয়েছে ১০ কোটি ৭৭ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরে কাঁচা পাট রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার।