পোশাক কারখানার সংস্কারে ধীরগতিতে উদ্বেগ জানিয়েছে পোশাক খাতের সংস্কারবিষয়ক ক্রেতাজোট ইউরোপের অ্যাকর্ড অন ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেফটি ইন বাংলাদেশ। জোটের উপদেষ্টা কমিটির সভায় বলা হয়, ত্রুটি চিহ্নিত কারখানার একটা বড় অংশ এখনও সংশোধনের নির্ধারিত সময়সীমার অনেক পেছনে রয়েছে। ত্রুটি সংশোধনের চলমান এ ধীরগতি উদ্বেগজনক। এ জন্য সংস্কারে যথেষ্ট অগ্রগতি দেখাতে ব্যর্থ এমন ৬০৮ কারখানাকে সতর্কতা নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সংশোধনে ব্যর্থতা এবং কর্মকর্তাদের সহযোগিতা না করায় আরও ১০২ কারখানাকে অ্যাকর্ড থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
রাজধানীতে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জোটের উপদেষ্টা কমিটির সভায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। গত মঙ্গলবার অ্যাকর্ডের ওয়েবসাইটে সভার কার্যবিবরণী প্রকাশ করা হয়। ওই বৈঠকে ক্রেতা, ব্র্যান্ড প্রতিনিধি, শ্রমিক নেতা, মালিক পক্ষ, এনজিও প্রতিনিধিসহ অ্যাকর্ডের পরিচালনা কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সংস্কার কার্যক্রমের হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপান করা হয়। এতে জানানো হয়, প্রাথমিক পরিদর্শনে চিহ্নিত ত্রুটির ৮৪ শতাংশ এরই মধ্যে সংশোধন হয়েছে। এ পর্যন্ত সংশোধন হয়েছে ৭২ হাজার ৮৫২টি ত্রুটি। প্রাথমিক পরিদর্শনে অ্যাকর্ডভুক্ত কারখানায় ৮৬ হাজার ৭৮৯টি ত্রুটি ধরা পড়ে। মোট এক হাজার ৬১৯টি কারখানার সংস্কার উন্নয়ন নিয়ে কাজ শুরু করে অ্যাকর্ড।
সভায় জানানো হয়, চিহ্নিত ত্রুটি সংশোধনের জন্য সংশোধন কর্মপরিকল্পনা (ক্যাপ) জমা দিয়েছে এক হাজার ৫১৮ কারখানা কর্তৃপক্ষ। ক্যাপ অনুযায়ী শতভাগ ত্রুটি সংশোধন হয়েছে ১৩০ কারখানার। আরও ৪৪৩টি কারখানায় ৯০ শতাংশেরও বেশি সংশোধন কাজ শেষ হয়েছে। তবে সংশোধনে যথেষ্ট অগ্রগতি দেখাতে ব্যর্থতা এবং কর্মকর্তাদের সহযোগিতা না করায় ৬০৮ কারখানাকে সতর্কতা নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আর জোটের তালিকা থেকে বাদ পড়া ১০২ কারখানা অ্যাকর্ডভুক্ত কোনো ক্রেতার কাজ পাচ্ছে না। তবে বাতিল হওয়ার দেড় বছরের মধ্যে নিজস্ব উদ্যোগে ত্রুটি সংশোধনের প্রমাণ দেখাতে পারলে এগুলোর আবার তালিকাভুক্ত হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
বৈঠকে সংস্কার কার্যক্রম সমন্বয়ে শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের (ডিআইএফই) নেতৃত্বাধীন রেমিডিয়েশন কো-অর্ডিনেশন সেলকে (আরসিসি) সহযোগিতা দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। প্রকৌশল, ব্যবস্থাপনা, তথ্য ও বিশেষজ্ঞ স্টাফ দিয়ে সহযোগিতা করতে পারে অ্যাকর্ড।
২০১৩ সালে সাভারে রানা প্লাজা ট্র্র্যাজেডির পর পোশাক কারখানা ভবনের কাঠামো, অগ্নি ও বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা উন্নয়নে ইউরোপের ২২০ ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ও কয়েকটি আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠনের সমন্বয়ে অ্যাকর্ড গঠন করা হয়। যেসব কারখানা থেকে জোটের ক্রেতারা পোশাক আমদানি করে- এ রকম এক হাজার ৬৭৭টি কারখানার মধ্যে এ পর্যন্ত এক হাজার ৫৫০টি কারখানার প্রাথমিক পরিদর্শন শেষ হয়েছে। বাকি ৭৫ কারখানার পরিদর্শন কাজ চলছে।