পোশাক শিল্পে কমছে নারীর কর্মসংস্থান। প্রযুক্তির প্রসারই এর কারণ বলে মনে করেন উদ্যোক্তারা। স্বাবলম্বী হওয়ার পথে, পোশাক খাতে নারী শ্রমিকের অংশগ্রহণ কমে যাওয়াকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন তারা। তবে এসব নারীর বিকল্প আয়ের উৎস তৈরি হচ্ছে কি-না সেদিকে নজর দেয়ার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে প্রতিদিন কর্মক্ষেত্রে যোগ দেন প্রায় ৪৪ লাখ শ্রমিক। প্রায় চার দশকের পথচলায় একটু একটু করে বড় হতে থাকা এই তৈরি পোশাক শিল্পে শুরু থেকেই বাড়তে থাকে নারীর অংশগ্রহণ। নারীর শ্রমে-ঘামে আর নিষ্ঠায় একটি শিল্প যে কত বড় হতে পারে, তার উদাহরণ হয়ে ওঠে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত।
তবে, সম্প্রতি বিআইডিএসসহ বিভিন্ন সংস্থার গবেষণায় দেখা গেছে পোশাক খাতে কমছে নারীর অংশগ্রহণ। তাদের তথ্য মতে, কয়েক বছর আগেও পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিকের ৮০ শতাংশই ছিল নারী, বর্তমানে যা ৬৫ শতাংশের বেশি না।
বিআইডিএস সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, এক এটা গবেষণায় নারীদের অংশগ্রহণ নিয়ে যে তথ্য দিচ্ছে তাতে ভিন্ন ভিন্ন পরিসংখ্যান প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু যে গবেষণায় যে পরিসংখ্যানই দিক না কেন তার প্রত্যেকটিতে স্পষ্ট নারীদের অংশগ্রহণ কমেছে।
ক্রমেই বাড়ছে নিজস্ব উদ্যোগে আয়ের উৎস। পোশাক শিল্পে এসে স্বাবলম্বী হওয়া নারী শ্রমিকরাও হাঁটছেন সেই পথে, যার প্রভাবে এই খাতে কমছে তাদের সংখ্যা। অর্থনীতির সার্বিক চিত্র বিবেচনায় এই পরিবর্তনকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন উদ্যোক্তারা। বিজিএমইএ সহসভাপতি মোহাম্মদ নাসির বলেন, যে নতুন নতুন মেশিনগুলো আসছে। সেগুলো নারীরা অপারেট করতে পারে না।
এফবিসিসিআই সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, অনেকে বেশ কিছুদিন চাকরির পর বেশ কিছু সঞ্চয় করেছে। আর সেই সঞ্চয় দিয়ে তারা ছোটখাটো ব্যবসা শুরু করছে। এটা একটা ভাল দিক।
তবে অর্থনীতি বিশ্লেষকদের পরামর্শ ব্যক্তি উদ্যোগে তাদের আয়ের পথ তৈরি হচ্ছে কি-না, তা রাখতে হবে নজরদারির মধ্যে। বিআইডিএস সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, এক ধাক্কায় এই যে নারীদের অংশগ্রহণ কমে যাচ্ছে। এটা নজরদারিতে রাখতে হবে। অবশ্য খাত সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ আগামী দিনে পোশাক শিল্পে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে জোর দিতে হবে প্রযুক্তিগত দক্ষতার উন্নয়নে।