যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের তৈরি পোশাক খাত। দীর্ঘদিন পর চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই ধরে রেখেছে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি। এ অবস্থায় বাজার সক্ষমতা ধরে রাখতে পণ্য সরবরাহের সময় ‘লিড টাইম’ কমিয়ে আনতে উদ্যোগ নেয়ার তাগিদ ব্যবসায়ীদের। আর জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যেন ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নষ্ট না হয়, সেদিকে নজর রাখার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।
দেশের মোট তৈরি পোশাক রফতানির পাঁচ ভাগের একভাগই রফতানি হয় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে। শুধু রফতানি আয়ের দিক দিয়েই নয়, কূটনৈতিকভাবেও বরাবরই আলোচনার কেন্দ্রে মার্কিন বাজার। বিজিএমইএর তথ্য মতে, মার্কিন বাজারে ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি নিয়ে শেষ হয় ২০১৬-১৭ অর্থবছর। তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাস ধরেই দেশটিতে বেড়েছে তৈরি পোশাকের রফতানি, দীর্ঘদিন পর প্রবৃদ্ধিও হয়েছে ইতিবাচক ১ দশমিক ৬৮ শতাংশ। আর ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অটেস্কার পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মার্কিন বাজারে গত জানুয়ারিতে চীন, ভিয়েতনামের পরই সর্বোচ্চ তৈরি পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ। আর এক বছরের ব্যবধানে ওই মাসে বাজারটিতে সর্বোচ্চ পোশাক রফতানিকারক প্রথম চারটি দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে বাংলাদেশের।
পণ্যের গুণগত মান আর ব্যবসায়িক সম্পর্কোন্নয়নে রফতানিকারকদের নতুন নতুন উদ্যোগের ফলেই এ অর্জন বলে মনে করে বিজিএমইএ। সংস্থাটির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাসির বলেন, আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যে গবেষণা করেছে তাতে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থায় এই শিল্পের অবদান যে কতটুকু সেটা তারা তুলে ধরছে। আমি মনে করি, ভবিষ্যতে আমেরিকার বাজারটা আস্তে আস্তে আরও বড় হবে।
তবে পণ্য সরবরাহের সময় কমিয়ে আনতে না পারলে বাজার প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা উদ্যোক্তাদের। এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের পোর্টের, রাস্তার সমস্যা রয়ে গেছে। এসব কারণে কিন্তু আমরা প্রতিযোগিতায় হেরে যাচ্ছি।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে, নির্বাচনের বছরেও বজায় রাখতে হবে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ। অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, আমি আশাবাদী, দেশে যদি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকে, যেহেতু নির্বাচনের বছর এটা আমাদের বলতেই হয়, বড় রকমের পরিবর্তন আমাদের পোশাক খাত করেছে। সেইটার ওপর ভিত্তি করে আগামীতে প্রবৃদ্ধি আরও বেশি হবে। বাজার সুবিধা পেতে কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে নেয়া উদ্যোগগুলোর প্রচার বাড়াতে সরকারকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার তাগিদ তাদের।