২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) রফতানি আয় দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪০ কোটি ৬৪ লাখ ডলার। এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ২ হাজার ৮৫৭ কোটি ৫২ লাখ ডলার। অর্থাৎ রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৪১ শতাংশ। গত দশ মাসের রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৪৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার। এ সময়ে রফতানি আয় লক্ষ্যমাত্রা শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ কম অর্জিত হয়েছে। এদিকে অর্থবছরে দশ মাসে ২ হাজার ৫৩০ কোটি ৫৫ লাখ ডলারের পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ। এ সময়ে পোশাক রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ। পাশাপাশি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৩ দশমিক ১৭ শতাংশ। বৃহস্পতিবার রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
ইপিবি’র প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রফতানি আয় অর্জিত হয়েছিল ৩ হাজার ৪৬৫ কোটি ৫৯ লাখ ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৭৫০ কোটি ডলার। অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) রফতানি আয় দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪০ কোটি ৬৪ লাখ ডলার। এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ২ হাজার ৮৫৭ কোটি ৫২ লাখ ডলার। অর্থাৎ রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৪১ শতাংশ। গত দশ মাসের রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৪৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
এ সময়ে রফতানি আয় লক্ষ্যমাত্রা শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ কম অর্জিত হয়েছে। প্রতিবেদনের তথ্য মতে, দেশের পণ্য রফতানি আয়ের ৮০ শতাংশেরও বেশি আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে জুলাই-এপ্রিল মাসে ২ হাজার ৫৩০ কোটি ৫৫ লাখ মার্কিন ডলারের পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ। তার আগের অর্থবছরের একই সময়ে ২ হাজার ৩১৩ কোটি ৭৩ লাখ ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছিল। গত বছরের তুলনায় পোশাক রফতানিতে ৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। জুলাই-এপ্রিল মাসে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৪৫২ কোটি ৭৭ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৩ দশমিক ১৭ শতাংশ । গত দশ মাসে ১ হাজার ২৭৬ কোটি ৫২ লাখ ডলারের ওভেন পোশাক ও ১ হাজার ২৫৪ কোটি ২ লাখ ডলারের নিট পোশাক রফতানি হয়েছে। আগের অর্থবছরের তুলনায় নিট পোশাকে ১১ দশমিক ৪৩ শতাংশ ও ওভেন পোশাকে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। পাশাপাশি নিটওয়্যার ও ওভেন পোশাকে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। নিটওয়্যার পোশাকে রফতানিতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ৩ দশমিক ১৭ শতাংশ। ওভেন পোশাকে লক্ষ্যমাত্রা ২ দশমিক ১২ শতাংশ অর্জিত হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সম্প্রতি বিভিন্ন কারণে সক্ষমতা হারিয়ে প্রায় ১ হাজার ২০০টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বিশেষ করে এ্যাকোর্ড, এ্যালায়েন্স-এর পরিদর্শনের পর কিছু কারখানা আংশিক, সাময়িক ও পূর্ণাঙ্গভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যাংক ঋণ ও বাড়িভাড়াসহ অন্যান্য ব্যয় মিটিয়ে অনেকের পক্ষে টিকে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে কঠিন সঙ্কটের মুখে পোশাক শিল্প। তারপরও পোশাক রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি ও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। কিন্তু আমরা দুশ্চিন্তায় আছি সামনের দিনগুলো নিয়ে। বিজিএমইএ প্রেসিডেন্ট বলেন, পোশাক তৈরির উপকরণ বোঝাই জাহাজকে পণ্য খালাসের জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে, পণ্য খালাস করতে না পারায় কন্টেনার ভাড়া বাবদ বন্দর ও জাহাজ কোম্পানিতে অতিরিক্ত জরিমানা প্রদান করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, টানা আড়াই মাসের বেশি সময় ধরে বন্দরে জাহাজজট চলমান থাকার পরিস্থিতির সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে জাহাজীকরণ জটিলতাÑ রফতানি কন্টেনার না নিয়েই জাহাজের বন্দর ছেড়ে যাওয়ার ঘটনা, যা ইতিহাসে কখনই ঘটেনি। এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বিদেশী ক্রেতারাও সময় মতো পোশাক পাবে না। অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে মাছ রফতানি করে ৪৩ কোটি ৪৯ লাখ ডলার আয় এসেছে। গত বছরের একই সময়ে এ খাতে ৪২ কোটি ৫০ লাখ ডলার আয় আসে। সে হিসেবে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ২ দশমিক ৩২ শতাংশ। অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে কৃষি খাতে রফতানি হয়েছে ৫৪ কোটি ৩১ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে এ খাতে ৪৬ কোটি ৫১ লাখ ডলার আয় আসে।
সে হিসেবে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ। একই সঙ্গে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ১৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ। গত দশ মাসে পাট ও পাট জাতীয় পণ্য রফতানি হয়েছে ৮৮ কোটি ৯৭ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে এ খাতে ৮২ কোটি ৬৪ লাখ ডলার আয় আসে। সে হিসেবে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এছাড়া জুলাই-এপ্রিল মাসে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানিতে আগে অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ দশমিক ২ শতাংশ কম প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। আয় হয়েছে ৯১ কোটি ৬৭ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৮ দশমিক ৩২ শতাংশ কম।