Home Bangla Recent রপ্তানিতে শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছে পোশাক খাত

রপ্তানিতে শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছে পোশাক খাত

তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বিশ্ববাজারে শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) বিভিন্ন দেশে পোশাক রপ্তানি করে দুই হাজার ৮১৩ কোটি (২৮.১৩ বিলিয়ন) ডলার আয় হয়েছে। এই অঙ্ক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১০ শতাংশ বেশি। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ৩ দশমিক ২৪ শতাংশ। মূলত তৈরি পোশাকের ওপর ভর করেই রপ্তানি আয় বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ। অর্থবছর শেষে এই খাতের রপ্তানি ৩০ বিলিয়ন (৩ হাজার কোটি) ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন রপ্তানিকারকরা।

জানা যায়, বর্তমানে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে দ্বিতীয়। প্রথম অবস্থানে রয়েছে চীন। দেশ দুটির রপ্তানি ব্যবধান ১১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তৈরি পোশাকের প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরো অঞ্চলের অর্থনীতিতে নতুন গতি আসায় বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। আগামী দিনগুলোতে রপ্তানি আয় আরও বাড়বে বলে আশা করছেন তিনি।

তবে টাকার বিপরীতে ডলারের দরবৃদ্ধি রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে অবদান রাখছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অর্থনীতিবিদ মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে টাকার বিপরীতে ডলারের দর বেড়েছে ৪ শতাংশের বেশি। ছয় মাসে বেড়েছে ৩ শতাংশ।

অর্থবছরের শেষ মাসেও (জুন) রপ্তানি আয় বৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে মনে করেন বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর সহ-সভাপতি ফারুক হাসান। তিনি বলেন, কারখানাগুলোর উন্নয়নে মালিকরা অনেক টাকা বিনিয়োগ করেছেন। কষ্টও করেছেন। ৮০ শতাংশের বেশি কারখানা উন্নত কর্মপরিবেশের (কমপ্লায়েন্স) আওতায় চলে এসেছে। এতে বায়াররাও খুশি। যার ইতিবাচক ফল আমরা পাচ্ছি। সামগ্রিক রপ্তানিতে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ১০ শতাংশ। এবার পোশাক রপ্তানি ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।

ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন ঘিরে পোশাক রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব বিষয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে তেমন কোন প্রভাব পড়বে না। আমরা ইতোমধ্যে বায়ারদের বুঝিয়েছি যে, গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে যে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে, তা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। তাতে তারা আশ্বস্ত হয়েছেন। আগের মতোই পোশাকের অর্ডার দিচ্ছেন। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বড় ধসের পর অক্টোবর, নভেম্বর, ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ, এপ্রিল প্রতি মাসেই বেড়েছে রপ্তানি আয়।

মঙ্গলবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই মে) বিভিন্ন দেশে পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ তিন হাজার ৩৭৩ কোটি (৩৩.৭৩ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছে। এই অঙ্ক গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দশমিক ৪৪ শতাংশ কম। এই ১১ মাসে লক্ষ্যমাত্রা ধরা ছিল তিন হাজার ৩৮৭ কোটি ৭০ লাখ (৩৩.৮৭ বিলিয়ন) ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে তিন হাজার ১৬২ কোটি ২৮ লাখ (৩১.৬২ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল বাংলাদেশ।

২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে দুই হাজার ৮১৩ কোটি (২৮.১৩ বিলিয়ন) ডলারের যে আয় হয়েছে তার ৮৩ দশমিক ৪ শতাংশই এসেছে তৈরি পোশাক থেকে। এর মধ্যে নিটওয়্যার খাতের পণ্য রপ্তানিতে এক হাজার ৩৯৪ কোটি ডলার এবং উভেন পোশাক রপ্তানিতে এক হাজার ৪১৯ কোটি ডলার আয় হয়েছে। এই ১১ মাসে নিট খাতে রপ্তানি বেড়েছে ১১ দশমিক ৪৮ শতাংশ। আর উভেনে বেড়েছে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here