পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ। তবে জুলাই থেকে মে সময় পর্যন্ত রপ্তানি আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল তা অর্জিত হয়নি। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অর্জন কমেছে দশমিক ৪৪ শতাংশ।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সর্বশেষ তথ্য হিসাবে দেখা গেছে, চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে সময় পর্যন্ত রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ৩৮৭ কোটি ডলার। বিপরীতে অর্জিত হয়েছে ৩ হাজার ৩৭২ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৭৫০ কোটি ডলার। গেল অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৩ হাজার ১৬২ কোটি ডলার।
খাতওয়ারি বিশ্লেষণে দেখা গেছে প্রাইমারি কমোডিটির ক্ষেত্রে রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং ম্যানুফাকচার্ড কমোডিটির ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ। এর মধ্যে প্রাইমারি কমোডিটিরগুলোর মধ্যে হিমায়িত খাদ্য ও মাছ রপ্তানির প্রবৃদ্ধি উভয় ক্ষেত্রে কমেছে। আগের বছরের তুলনায় রপ্তানি প্রবৃদ্ধি কমেছে ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং জুলাই থেকে মে সময় পর্যন্ত রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অর্জন কমেছে ৩ দশমিক ৭২ শতাংশ। তথ্যানুযায়ী, মাছ রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭২ লাখ ডলার। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৫৪ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরে মাছ রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৮০ লাখ ডলার এবং আগের অর্থবছরে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৮০ লাখ ৫ হাজার ডলার। তবে হিমায়িত খাদ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। হিমায়িত খাদ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪ কোটি ডলার। বিপরীতে অর্জিত হয়েছে ৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার। হিমায়িত খাদ্য রপ্তানির প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৩৪ দশমিক ০১ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে হিমায়িত খাদ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার।
চিংড়ি রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি কমেছে ৫ দশমিক ০৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে সময় পর্যন্ত চিংড়ি রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪০ কোটি ৬৫ লাখ ডলার। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৩৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় কম হয়েছে ৭ দশমিক ৫১ শতাংশ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে চিংড়ি রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৫ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছিল ৪৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
কাঁকড়া রপ্তানির ক্ষেত্রে ১৭ দশমিক ৬০ শতাংশ কম প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে কাঁকড়া রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ কোটি ৭১ লাখ ডলার। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ১ কোটি ৪৭ লাখ ডলার। ফলে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রপ্তানি কম হয়েছে ১৩ দশমিক ৮১ শতাংশ। গেল অর্থবছরের ১১ মাসে কাঁকড়া রপ্তানি হয়েছিল ১ কোটি ৭৯ লাখ ডলার এবং সে সময় রপ্তানি হয়েছিল ১ কোটি ৮২ লাখ ডলার।
প্রাইমারি কমোডিটির মধ্যে অন্যান্য খাতের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ। অন্যান্য খাতের জন্য চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ কোটি ১৭ লাখ ডলার। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ১ কোটি ৪০ লাখ ডলার। মাসওয়ারি হিসাবে ১১ মাসে অন্যান্য খাতের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৯ দশমিক ৫১ শতাংশ বেশি হয়েছে।
প্রাইমারি কমোডিটির মধ্যে থাকা কৃষিপণ্যের রপ্তানির প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ১৮ দশমিক ০৯ শতাংশ। এ খাতের মধ্যে চা রপ্তানির প্রবৃদ্ধি কমেছে ৪১ দশমকি ০৩ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে চা রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪৫ লাখ ডলার। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ২৫ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরে চা রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছিল ৪৪ লাখ ডলার। সবজি রপ্তানির ক্ষেত্রেও প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়নি। অর্থবছরের ১১ মাসে সবজি রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭ কোটি ২২ লাখ ডলার। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৭ কোটি ১২ লাখ ডলার। ফলে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রপ্তানি আয় ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ কম হয়েছে। আর প্রবৃদ্ধি কম হয়েছে ৭ দশমিক ৩২ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের ১১ মাসেই পুরো অর্থবছরের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছে তামাক। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ কোটি ৫৯ লাখ ডলার। আর অর্থবছরের ১১ মাসে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ কোটি ১৪ লাখ ডলার। বিপরীতে রপ্তানি আয় হয়েছে ৫ কোটি ৪২ লাখ ডলার, যা পুরো অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেশি। তামাক খাতে রপ্তানির প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ২৩ দশমিক ৩২ শতাংশ। গেল অর্থবছরে তামাক রপ্তানি হয়েছিল ৪ কোটি ৬৬ লাখ ডলার।
এছাড়া পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানির প্রবৃদ্ধি কমেছে ১১ দশমিক ০৮ শতাংশ।