Home Bangla Recent তৈরি পোশাকের দাম বাড়াতে হবে

তৈরি পোশাকের দাম বাড়াতে হবে

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, তৈরি পোশাক খাতকে নিরাপদ ও কর্মবান্ধব করে গড়ে তুলেছে বাংলাদেশ। শ্রম আইন সংশোধন করে শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। বিপুল অর্থ বিনিয়োগে আধুনিক করা হয়েছে তৈরি পোশাক কারখানাগুলো। বিশ্বমানের কারখানায় বাংলাদেশে পোশাক তৈরি হচ্ছে। কিন্তু তৈরি পোশাক ক্রেতারা (বিদেশিরা) মূল্য বৃদ্ধি করছে না। তৈরি পোশাকের মূল্য বৃদ্ধি করতে হবে। মঙ্গলবার ঢাকায় হোটেল পূর্বাণীতে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘ক্যাপাসিটি বিল্ডিং অব রিমেডিয়েশন কো-অর্ডিনেশন সেল (আরসিসি) শেয়ারিং প্রোগ্রেস অ্যান্ড ওয়ে ফরোয়ার্ড’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক, সচিব আফরোজা খানম, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিজিএমইএর সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও নরওয়ের রাষ্ট্রদূত, অ্যাকর্ড, অ্যালায়েন্স, বিকেএমইএ এবং শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার ও কারখানার মালিকরা সম্মিলিতভাবে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে অপ্রত্যাশিত রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশে আর কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। এরই মধ্যে দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোয় প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হয়েছে। অত্যাধুনিক গ্রিন ফ্যাক্টরি নির্মাণ করা হয়েছে। কারখানাগুলো তদারকি করার জন্য অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের এখন আর প্রয়োজন নেই। তাদের ৫ বছরের জন্য দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছিল। গেল ৭ মে তাদের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়ার জন্য ৬ মাস মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। আর কোনো সময় বৃদ্ধি করা হবে না। এখন রিমেডিয়েশন কো-অর্ডিনেশন সেল (আরসিসি) বা সংস্কার সমন্বয়ক সেল তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর কাঠামো, অগ্নি ও বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দায়িত্ব পালন করবে।

তিনি আরও বলেন, বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত সাসটেইনেবিলিটি কম্প্যাক্টের চতুর্থ পর্যালোচনা সভায় অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের কাজের মেয়ার বৃদ্ধি করার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। আমরা জানিয়ে দিয়েছি, বাংলাদেশ নিজেই এ কাজ করতে এখন সক্ষম। আরসিসিকে দক্ষ জনবল দিয়ে সাজানো হয়েছে। তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর কাঠামো, অগ্নি ও বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত ইঞ্জিনিয়ারকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও) সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে।

অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক বলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই ৭৫৫টি পোশাক কারখানার সংস্কার কাজ শেষ করতে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে শেষ না করলে কারখানাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, রেমিডিয়েশন কো-অর্ডিনেশন বা সংস্কারকাজ সমন্বয় সেলের (আরসিসি) কাজ শুরু হয়েছে। বর্তমানে ৩০টির বেশি সভা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৭৫৫টি কারখানার সংস্কারকাজ সম্পন্ন করতে পারেনি। তাদের চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে সংস্কারকাজ সম্পন্ন না করলে তাদের কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হবে।

মুজিবুল হক বলেন, আন্তর্জাতিক ক্রেতা জোট অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের মেয়াদ শেষ হয়েছে চলতি বছরের মে মাসে। কারখানা সংস্কার তদারকিতে তাদের ছয় মাস সময় দেওয়া হয়েছে। তারা নতুন করে সময় চাচ্ছে। কিন্তু আমরা আর সময় বাড়াব না। আরসিসি গঠন করা হয়েছে। এখন আমরাই পরবর্তীতে কারখানা সংস্কার কাজের তদারকি করতে পারব। কারণ অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স আমাদের প্রকৌশলী দিয়েই কাজ করিয়েছে।

তিনি বলেন, এরই মধ্যে আরসিসির সক্ষমতা বাড়াতে ৬০ প্রকৌশলী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম শেষ হয়েছে। শিগগিরই আরও ৪০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এছাড়া বিভিন্ন সংস্থার কর্মীসহ মোট ১৩০ জন এখানে কাজ করবে।

অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের অনুপস্থিতিতে রানা প্লাজার মতো দুর্ঘটনা হতে পারেÑ বিদেশিদের এমন আশঙ্কা রয়েছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের কারখানার সংস্কার কাজের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স তারা নিজেরাই বলেছে, আমাদের ৯৬ থেকে ৯৯ শতাংশ কারখানার সংস্কারকাজ সম্পন্ন হয়েছে। গেল ৫ বছরে রানা প্লাজার মতো দুর্ঘটনা ঘটেনি। চ্যালেঞ্জ করছি, আগামীতেও রানা প্লাজার মতো দুর্ঘটনা আর ঘটবে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here