বাংলাদেশের পোশাক খাতে গত পাঁচ বছরে যথার্থই উন্নয়ন হয়েছে। কারখানার প্রায় সর্বত্রই উন্নতি চোখে পড়ছে। কারখানা মালিক, শ্রমিক, ক্রেতা ও উন্নয়ন সহযোগী সবার মানসিকতায় ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। এই পরিবর্তনের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে সংস্কার কার্যক্রমে আরও দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে বাংলাদেশকে। এ জন্য বিনিয়োগ অব্যাহত রাখা হলে তা এ দেশের পোশাকের প্রতি ক্রেতাদের আস্থা আরও বাড়বে। বিদেশি উদ্যোক্তারা এখাতে বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন।
পোশাক খাত নিয়ে এমন পর্যবেক্ষণ আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) নতুন কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পোটিয়াইনেনের। গতকাল সোনারগাঁও হোটেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। গেল জুনে কান্ট্রি ডিরেক্টরের দায়িত্ব নেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে এটিই তার প্রথম আনুষ্ঠানিক মতবিনিময়। এতে তৈরি পোশাক ছাড়াও নিরাপদ অভিবাসন, মালিক-শ্রমিক সংলাপ, নারী-পুরুষ সমতা, জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেন তিনি। এ সময় আইএলওর ঢাকা অফিসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পোশাক খাতের সংস্কারে ধারাবাহিকতায় সরকার গঠিত বহুপক্ষীয় রেমিডিয়েশন কো-অর্ডিনেশন সেলের (আরসিসি) সক্ষমতা প্রসঙ্গে নতুন কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, সংস্কার তদারকে আরসিসির সক্ষমতা এখনও সেভাবে তৈরি হয়নি। তবে শিল্পকে নিরাপদ করতে সরকারের সদিচ্ছা আছে। একটি সক্ষম মনিটরিং প্রতিষ্ঠান চায় সরকার। এ বিষয়ে একটি রোডম্যাপ করা হয়েছে। এ জন্য সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে আইএলও।
ফিনল্যান্ডের নাগরিক টুমো পোটিয়াইনেন ২০ বছর ধরে আইএলওতে কাজ করছেন। রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশে আইএলওর পোশাক খাত উন্নয়ন প্রকল্পের দায়িত্ব পান। সে সময় সংস্থার উপপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। বছরখানেক আগে জেনেভায় আইএলওর সদর দপ্তরে ফিরে যান। নতুন করে বাংলাদেশে ফিরে আসতে পেরে নিজের সন্তুষ্টির কথা জানান তিনি। এ দেশে আইএলওর কার্যক্রমের অগ্রাধিকার প্রসঙ্গে টুমো জানান, সরকার ও শ্রমিকদের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন, ট্রেড ইউনিয়ন চর্চা এবং মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে সংলাপের আয়োজন, শিল্প এবং পেশাগত নিরাপত্তার উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ও দক্ষতা বৃদ্ধি, নিরাপদ অভিবাসনসহ আদিবাসী এবং এ বিষয়ে কাজ করছে আইএলও।