তুলার দাম ও চাহিদা কমে আসায় নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে সুতার দাম নি¤œমুখী হয়ে পড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের সুতার দাম পাউন্ডপ্রতি দুই থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সুতা তৈরির কাঁচামাল তুলার দাম কমতির দিকে। এ কারণে সুতার বাজারও পড়তির দিকে। তাছাড়া চীনা ও ভারতীয় কাপড় সহজলভ্য হওয়ায় দেশীয় কাপড়ের বেচাকেনায় মন্দা চলছে। এতে দেশীয় কাপড়ের চাহিদা কমে আসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সুতার বাজারে।
টানবাজারের বিভিন্ন মোকাম ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে ১০ কাউন্টের প্রতি পাউন্ড সুতা বেচাকেনা হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে একই কাউন্টের সুতা বেচাকেনা হয়েছিল ৬০ টাকায়। সে হিসাবে এ সুতার দাম পাউন্ডপ্রতি ৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
বাজারে ২০ কাউন্টের সুতা প্রকারভেদে বেচাকেনা হচ্ছে পাউন্ডপ্রতি ৬৭ থেকে ৮৫ টাকায়। একই কাউন্টের সুতা এক সপ্তাহ আগে বেচাকেনা হয়েছিল ৭০ থেকে ৮৭ টাকায়। সে হিসাবে এসব সুতার দাম পাউন্ডে ৩ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
এখন এক্সপোর্ট কোয়ালিটির ২৪, ২৬, ২৮ ও ৩০ কাউন্টের সুতা বেচাকেনা হচ্ছে পাউন্ডপ্রতি ১১৪ থেকে ১১৫ টাকায়। একই কাউন্টের সুতা ১৫ দিন আগেও বেচাকেনা হয়েছিল ১১৭ থেকে ১১৮ টাকায়। সে হিসাবে এসব সুতার দাম পাউন্ডে ৩ টাকা পর্যন্ত কমেছে। একই কাউন্টের দেশীয় কোয়ালিটির সুতা বর্তমানে বেচাকেনা হচ্ছে পাউন্ডপ্রতি ১১২ থেকে ১১৩ টাকায়। এসব সুতা ১০-১২ দিন আগেও বেচাকেনা হয়েছিল ১১৪ থেকে ১১৫ টাকায়। সে হিসাবে এসব সুতার দাম পাউন্ডে ২ টাকা কমেছে।
বাজারে ৪০ কাউন্টের সুতা বেচাকেনা হচ্ছে পাউন্ডপ্রতি ১২৬ থেকে ১২৮ টাকায়। একই কাউন্টের সুতা এক সপ্তাহ আগে বেচাকেনা হয়েছিল ১২৮ থেকে ১৩০ টাকায়। সে হিসাবে এসব সুতার দাম পাউন্ডে ২ টাকা কমেছে।
এখন ৮০ কাউন্টের সুতা প্রকারভেদে বেচাকেনা হচ্ছে পাউন্ডপ্রতি ২৪২ থেকে ২৪৫ টাকায়। ১৫-২০ দিন আগে একই কাউন্টের সুতা বেচাকেনা হয়েছিল ২৫২ থেকে ২৫৫ টাকায়। সে হিসাবে ৮০ কাউন্টের সুতার দাম পাউন্ডে ১০ টাকা কমেছে।
বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সোলায়মান মিয়া জানান, কোরবানি ঈদের পর বেশ কিছুদিন সুতার মার্কেট বন্ধ ছিল। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার দাম কমতির দিকে। এসব কারণে দেশের বাজারে সব ধরনের সুতার দাম কমছে। সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা সুতার দাম পাউন্ডে পাঁচ টাকা এবং চিকন সুতার দাম ১০ টাকা পর্যন্ত কমছে। তিনি বলেন, সংসদ নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হওয়ায় কাপড় ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগের ঝুঁকি নিচ্ছেন না।
নারায়ণগঞ্জের সুতা ব্যবসায়ী নেসার উদ্দিন কামাল বলেন, দেশের বাজার বিদেশী সস্তা কাপড়ে সয়লাব হয়ে পড়েছে। দেশীয় সুতার উৎপাদিত কাপড় দামের তুলনামূলক বেশি হওয়ায় বেচাকেনায় মন্দা চলছে, যার প্রভাব পড়েছে সুতার বাজারে।
টানবাজারের আরেক সুতা ব্যবসায়ী শাহজালাল খোকন বলেন, ঈদের পর থেকেই সুতার বাজারে মন্দা। তাতিরা বাজারে আসছেন না। কাপড়ের মোকামগুলোয় বেচাকেনা খুবই কম। এতে সুতার দাম কমছে। বিদেশী কাপড় আমদানি বন্ধ না করলে এ সংকট কাটবে না।