Home Bangla Recent যুক্তরাষ্ট্রে দর বাড়ছে তৈরি পোশাকের

যুক্তরাষ্ট্রে দর বাড়ছে তৈরি পোশাকের

প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশের রফতানি বেড়েছে

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাকের খুচরা পর্যায়ে দর আবার বাড়ছে। আগস্টের তুলনায় গেল সেপ্টেম্বরে সব ধরনের পোশাকের দর বেড়েছে দশমিক ৯ শতাংশ। আগামীতে পোশাকের দর আরও বাড়তে পারে। গত চার বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক দর পড়তির প্রবণতার মধ্যে হঠাৎ এ খবরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন উদ্যোক্তারা। ২০১৪ থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে বাংলাদেশি পোশাকে দর কমেছে ১১ দশমিক ৭২ শতাংশ। এদিকে চলতি অর্থবছরের গত তিন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানি বেড়েছে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ শতাংশ। দীর্ঘ দিন পর এত বেশি হারে রফতানি বেড়েছে দেশটিতে।

দর এবং বাজার বাড়াতে একগুচ্ছ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে। বিশেষ করে বংলাদেশের পোশাকের প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য যুদ্ধ থেকে সুবিধা পেতে মার্কিন ব্র্যান্ড এবং ক্রেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নসহ কূটনৈতিক পর্যায়েও কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুক্তরাষ্ট্র সফরে কয়েকজন ব্যবসায়ী নেতা যুক্তরাষ্ট্রে বাজার বাড়াতে ব্র্যান্ড প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠক থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে।

মার্কিন শ্রম বিভাগের পরিসংখ্যান ব্যুরো বিএলএস গত বৃহস্পতিবার তাদের ওয়েবসাইটে পোশাকের দর বৃদ্ধির তথ্য প্রকাশ করেছে। বিভিন্ন ব্র্যান্ড এবং খুচরা ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীদের বরাত দিয়ে এতে বলা হয়, আগামীতে পোশাকের দর আরও বাড়তে পারে। বিএলএসের তথ্য অনুযায়ী সর্বশেষ ভোক্তা মূল্য সূচকে গড়ে পুরুষদের পোশাকের দর বেড়েছে ২ দশমিক ২ শতাংশ। ১ দশমিক ৬ শতাংশ হারে দর বেড়েছে নারীদের পোশাকের। আগামীতে দর আরও বাড়ার কারণ ব্যাখ্যায় নির্বাহীরা বলেছেন, কাঁচামালের দর বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় আগামীতেও উৎপাদিত পণ্যের দর বাড়বে।

অবশ্য অন্য কারণেও যুক্তরাষ্ট্রে পোশাকের দর বেড়ে থাকতে পারে। দর বাড়াতে রফতানিকারকদের পাশাপাশি শ্রমিক সংগঠন এবং অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে চাপ আছে। গত এপ্রিলে ৩টি আন্তর্জাতিক শ্রম অধিকার সংস্থা ক্লিন ক্লথ ক্যাম্পেইন, ইন্টারন্যাশনাল লেবার রাইটস ফোরাম ও ম্যাকুইলা সলিডারিটি নেটওয়ার্ক যৌথভাবে ২৫টি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে ন্যায্য হারে পোশাকের দর বাড়াতে চিঠি লিখেছে।

জানতে চাইলে বিজিএমইএর সিনিয়র সহসভাপতি ফারুক হাসান সমকালকে জানান, মার্কিন ক্রেতাদের সঙ্গে দর কষাকষিতে কোনো ক্রেতা যেন হাতছাড়া না হয় সে বিষয়ে বিজিএমইএর সদস্যদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। নতুন যত বেশি ক্রেতার সঙ্গে ব্যবসা শুরু করা যাবে, ভবিষ্যতের জন্যও তাদের ধরে রাখা যাবে। আবার পোশাক খাতের সংস্কার এবং আধুনিক মেশিনারিজ সংযোজনের ফলে বাড়তি কাজ নেওয়ার মতো সক্ষমতাও তৈরি হয়েছে। মূল্য সংযোজিত পণ্য উৎপাদনেও মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে তাদের। তিনি বলেন, শ্রমিকদের মধ্যেও উৎপাদনশীলতা বেড়েছে। ফলে সব বিবেচনায় একটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন বাংলাদেশ। তিনি বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাদের রফতানি আদেশ ভালোই পাচ্ছেন তারা।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের গত তিন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানি বেড়েছে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ শতাংশ। গত বছরের এ সময়ে বৃদ্ধির এই হার ছিল প্রায় সাড়ে তিন শতাংশ। আলোচ্য সময়ে ১৪৮ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছে। আগের একই সময়ে এ পরিমাণ ছিল ১৩১ কোটি ডলার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here