Home Bangla Recent সেপ্টেম্বরে রফতানি বাড়ল রেকর্ড ৫৫%

সেপ্টেম্বরে রফতানি বাড়ল রেকর্ড ৫৫%

রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধির নতুন রেকর্ড হলো গেল সেপ্টেম্বর মাসে। গত বছরের একই মাসের চেয়ে সেপ্টেম্বরে রফতানি বেশি হয়েছে ৫৫ শতাংশ। আর এ মাসের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি হয়েছে সাড়ে ১৪ শতাংশ। সেপ্টেম্বরের রেকর্ডের সুবাদে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) আগের একই সময়ের তুলনায় রফতানি বেড়েছে ১৫ শতাংশের মতো।

চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্ট পর্যন্ত রফতানি বৃদ্ধির হার ছিল আড়াই শতাংশ। এর মধ্যে গত আগস্টে রফতানি কমে যায় আগের বছরের একই মাসের তুলনায় প্রায় ১২ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে এসে হঠাৎ এত বেশি হারে বৃদ্ধির প্রধান কারণ, গত বছরের এ সময়ে রফতানি আয়ের দুর্বল ভিত্তি। গত বছরের এই মাসে রফতানি ৯ শতাংশ কম ছিল। এ কারণে একক মাস হিসেবে গত আগস্টের তুলনায় ছয় কোটি ডলার পিছিয়ে থাকার পরও রেকর্ড প্রবৃদ্ধি হলো। এ ছাড়া চীন-মার্কিন বাণিজ্য লড়াই থেকেও কিছুটা সুবিধা রফতানি আয়ে যোগ হয়েছে। এ বিরোধের কারণে বাংলাদেশের বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে চীনা পণ্যের অতিরিক্ত শুল্ক্কারোপ হয়েছে। চীনের প্রতিযোগী অন্যান্য রফতানিকারক দেশের মতো বাংলাদেশও কিছুটা এর সুবিধা পাচ্ছে।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে বিভিন্ন পণ্যের রফতানি থেকে আয় এসেছে ৩১৫ কোটি ডলার। গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় আয় বেশি হয়েছে ১১২ কোটি ডলার। এক মাসের রফতানিতে এটিই সর্বোচ্চ ব্যবধান। গত বছরের আলোচ্য মাসে রফতানির পরিমাণ ছিল ২০৩ কোটি ডলার। অন্যদিকে, জুলাই-সেপ্টেম্বর তিন মাসে রফতানি হয়েছে ৯৯৪ কোটি ডলারের পণ্য। এ সময়ে লক্ষ্যমাত্রা থেকে রফতানি বেশি হয়েছে ৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৩৩ কোটি ডলার।

চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রফতানি খাতের প্রধান পণ্য তৈরি পোশাকের রফতানি বেড়েছে ১৫ শতাংশ। রফতানি হয়েছে ৮১৯ কোটি ডলারের পোশাক। মোট রফতানি আয়ে তৈরি পোশাকের অংশ প্রায় ৮৪ শতাংশ। কয়েক বছর ধরে সাধারণত পোশাক খাতের মধ্যে নিট শ্রেণির রফতানি বেশি। তবে আলোচ্য সময়ে ওভেন বা শার্ট-প্যান্ট জাতীয় পোশাকের রফতানি বেড়েছে নিটের তুলনায় বেশি। এ সময়ে নিটের রফতানি বেড়েছে ১২ শতাংশের কিছু বেশি। আর ওভেনের বেড়েছে ১৭ শতাংশ। হোম টেক্সটাইল পণ্যের রফতানি বেড়েছে ৫ শতাংশের মতো। ২০ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল রফতানি হয়েছে আলোচ্য সময়ে।

সেপ্টেম্বরে এত বেশি হারে রফতানি বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান টেক্সওয়েভের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিজিএমইএর পরিচালক আশিকুর রহমান তুহিন সমকালকে বলেন, আসলে আগের মতো রফতানিতে এখন ধারাবাহিক কোনো প্রবণতা থাকছে না। প্রায় প্রতি মাসেই আগের মাসের তুলনায় ভিন্নতা ইদানীং লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আগে মৌসুম ছিল দুটি। এখন অন্তত চারটি। এ কারণে পরিবর্তনটা বেশি। গত সেপ্টেম্বরে বেশি রফতানির প্রবৃদ্ধির দুটি কারণ বেশ স্পষ্ট। প্রথমত, সব সময়ই ঈদের মাসে প্রায় ১০ দিনের মতো উৎপাদন বন্ধ থাকার জেরে পরবর্তী মাসে রফতানি অনেক বেশি দেখা যায়। দ্বিতীয় মাসেও সেই রেশ কিছুটা থাকে। সেপ্টেম্বরের রফতানি আয়ে গত ঈদের কিছুটা প্রভাব আছে। দ্বিতীয়ত, চীন-মার্কিন বাণিজ্যে শুল্ক্ক লড়াই। যুক্তরাষ্ট্র কিছু চীনা পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক্কারোপের কারণে এ লড়াইয়ে সুবিধা পেতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। এ সুবাদে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু নতুন ক্রেতা রফতানি আদেশ নিয়ে কথাবার্তা বলছেন। এই বিবেচনায় পরিমাণে কম হলেও কিছু পণ্য এরই মধ্যে রফতানি হয়েছে। যদিও পোশাক রফতানির প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ। আগামী মাসগুলোতে আরও বেশি পরিমাণে পোশাক রফতানির আশা করছেন তিনি।

পোশাক রফতানিতে বড় অঙ্কে বাড়লেও আলোচ্য সময়ে অনেক পণ্যের রফতানি কমেছে। এর মধ্যে হিমায়িত মাছের রফতানি কমেছে ১৮ শতাংশ। পাট ও পাটপণ্যের কমেছে ৮ শতাংশ। চামড়া ও চামড়া পণ্যের কমেছে ১৭ শতাংশ। তবে রফতানি বেড়েছে কৃষিপণ্যের ৯৭ শতাংশ এবং ওষুধের ২৫ শতাংশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here