গামের্ন্ট সেক্টরে নাশকতা ঠেকাতে এবার দেশের বিভিন্ন গামের্ন্ট ফ্যাক্টরি এলাকায় আধুনিক ফায়ার স্টেশন তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এসব ফায়ার স্টেশনের সক্ষমতা থাকবে অন্যান্য ফায়ার স্টেশনের থেকে অনেকগুণ বেশি। গামের্ন্টস শিল্প এলাকায় বড় ধরনের নাশকতা ও আগুন নিয়ন্ত্রণে দ্রæতই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে আধুনিক এসব স্টেশনের অগ্নি নিবার্পক কমীর্রা।
ঢাকা, চট্টগ্রাম ও পাবনা অঞ্চলের গামের্ন্টস শিল্প এলাকায় অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকার আশুলিয়া, গাজীপুর সদর, কোনাবাড়ি, কাশিমপুর, নারায়ণগঞ্জ, সোনারগঁাও, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রামের কণর্ফুলী, খুলশী, কক্সবাজারের মহেশখালী ও পাবনার ঈশ্বরদীতে এসব আধুনিক ফায়ার স্টেশন স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছে ফায়ার সাভির্স অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর।
ফায়ার সাভির্স সূত্র জানায়, দেশের তৈরি পোশাক শিল্পাঞ্চলে বড় ধরনের অগ্নিকাÐের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ২০০১ সালে সারাদেশে ছয় হাজার ৫১টি অগ্নিকাÐের ঘটনা ঘটে। ২০১৮ সালে এসে সেটা বেড়ে হয়েছে ১৮ হাজার ১০৫ এ দঁাড়িয়েছে। যার মধ্যে ২৫৯টি দুঘর্টনা ঘটেছে গামের্ন্টস প্রতিষ্ঠানগুলোতেই। এসব আগুনের ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১১৬ জন। বিগত তিন বছরে গামের্ন্টস শিল্প এলাকায় সংঘটিত অগ্নিকাÐে ক্ষতির পরিমাণ দঁাড়িয়েছে প্রায় ৪৬৭ কোটি টাকায়।
ফায়ার সাভিের্সর পরিকল্পনা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নতুন ফায়ার স্টেশনগুলোর প্রতিটিতে ছয় তলা ভবন নিমার্ণ করা হবে। রান্নাঘর, প্রাথর্না কক্ষ, একটি পরিদশর্ন যানসহ আগুন নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন আধুনিক সরঞ্জাম থাকবে। রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টে থাকবে ছয়তলা বিশিষ্ট স্টাফ কোয়াটার্র। এজন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৬২৯ কোটি টাকা।
অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কমর্কতার্রা জানান, দেশের গামের্ন্ট শিল্প অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে আধুনিক সুবিধাযুক্ত ফায়ার সাভির্স অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স স্টেশন নেই বললেই চলে। শিল্প এলাকার বাইরেও স্থাপন করা হয়েছে বিদ্যমান ফায়ার সাভির্স স্টেশন। সেগুলো দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা গামের্ন্ট শিল্প এলাকার আগুন দুঘর্টনা নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কারণ, অধিকাংশ গামের্ন্ট কারখানাই বহুতল ভবনে অবস্থিত। এ ধরনের ভবনে অগ্নি নিবার্পনের ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ প্রশিক্ষিত জনবল প্রয়োজন।
অন্যদিকে বিদেশি ক্রেতারা আগুন নিরাপত্তাসহ সকল দুঘর্টনায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পূবর্শতর্ আরোপ করেছে।
এ প্রেক্ষাপটে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের তৈরি পোশাক শিল্প অধ্যুষিত অঞ্চলে আধুনিক ফায়ার স্টেশন নিমাের্ণর প্রয়োজনীয়তা খুব বেশি দেখা দেয়। এছাড়া কক্সবাজারের মহেশখালীতে মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ফায়ার সাভির্স স্টেশন নিমার্ণ জরুরি হয়ে পড়ে। যার কারণে সরকার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ১১টি ফায়ার সাভির্স স্টেশন নিমাের্ণর উদ্যোগ নিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফায়ার সাভির্স অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের অধিদফতরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মেদ খান বলেন, ‘জাতীয় অথৈর্নতিক পরিষদের নিবার্হী কমিটি (একনেক) এ সভায় এটি মাত্র পাস হয়েছে। আধুনিক এই ফায়ার স্টেশনগুলো তৈরির কাজ খুব শিগগিরই শুরু হবে আশা করছি। এর জন্য নিদির্ষ্ট এসব এলাকায় জায়গা কিনতে হবে। এরপর এগুলোর টেন্ডার হবে, তারপর আমরা আধুনিক ফায়ার স্টেশন নিমাের্ণর কাজ শুরু করবো। সব মিলিয়ে এক-দেড় বছর সময় লাগবে।’
‘এই আধুনিক ফায়ার স্টেশনগুলোতে স্পেশাল ও আধুনিক ইকুইপমেন্ট বেশি বেশি থাকবে। যাতে করে দ্রæত ফায়ার স্টেশনগুলো থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।’